Tuesday, September 13, 2016

চর্যাপদ

♨ চর্যাপদের প্রাককথা :
◆ বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন যুগের একমাত্র নিদর্শন – চর্যাপদ।
◆ ‘চর্যা’ শব্দের অর্থ – অাচারণ।
◆ চর্যাপদের মূল নাম – চর্যাচর্যবিনিশ্চয়।
◆ চর্যাপদ হচ্ছে – বৌদ্ধ সহজিয়াদের সাধন সঙ্গীত।
◆ চর্যাপদ অাবিষ্কার হয় – নেপালের রাজদরবার থেকে, ১৯০৭ সালে।
◆ চর্যাপদের পদগুলো রচিত – মাত্রাবৃত্ত ছন্দে।
◆ চর্যাপদের পুথিগুলো বই অাকারে প্রকাশ পায় – ১৯১৬ সালের বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে।
রচনাকাল :
◆ ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, চর্যাপদের রচনাকাল – ৬৫০-১২০০ খ্রিষ্টাব্দ।
◆ ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে, চর্যাপদের রচনাকাল – ৯৫০-১২০০ খ্রিষ্টাব্দ।
◆ ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ চর্যাপদের রচনা সম্পর্কে মত দিয়েছেন – ভাষা ও অপরাপর লক্ষণের ওপর ভিত্তি করে।
◆ ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় চর্যাপদের রচনাকাল সম্পর্কে মত দিয়েছেন – ভাষা বৈশিষ্ট্যের অালোকে।
♨ চর্যাপদের পদকর্তা ও পদসংখ্যা :
◆ চর্যাপদের পদকর্তা হিসেবে পাওয়া যায় – মোট ২৩ জন, মতান্তরে ২৪ জনের পরিচয়।
◆ চর্যাপদের পদকর্তাদের নামের পরিচয় পাওয়া যায় – গানের মাঝে ও শেষের ভনিতা থেকে।
◆ চর্যাপদকর্তাদের নামের শেষে যোগ করা হয়েছে – গৌরবসূচক ‘পা’।
◆ চর্যাপদকর্তারা প্রায় সকলেই – বৌদ্ধ চৌরাশি সিদ্ধার অন্তর্গত।
◆ চর্যাপদের সবচেয়ে বেশি পদের রচয়িতা – কাহ্নপা।
◆ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে প্রাচীনতম চর্যাকার – শবরপা।
◆ সংখ্যাধিক্যে চর্যাগীতির দ্বিতীয় কবি – ভুসুকুপা।
◆ ভুসুকুপা ছিলেন – সৌরাষ্ট্রের রাজপুত্র।
◆ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, চর্যাপদের অাধুনিকতম পদকর্তা – সরহপা অথবা ভুসুকুপা।
◆ চর্যাপদের প্রথম পদটির রচয়িতা – লুইপা।
◆ ড. শহীদুল্লাহর মতে, চর্যাপদের পদ রয়েছে – ৫০ টি।
◆ চর্যাপদের প্রাপ্ত পদ – ৪৬.৫ টি।
◆ ড. সুকুমার সেনের মতে, চর্যাপদে পদ রয়েছে – ৫১ টি।
◆ চার্যাপদের যেসব পদ পাওয়া যায় নি – ২৪, ২৫, ৪৮ নং পদ।
◆ চর্যাপদের যে পদ খন্ডিত অাকারে পাওয়া গেছে – ২৩ নং পদ।
◆ চর্যাপদে পদকর্তার নাম থাকলেও পদ পাওয়া যায় নি – লাড়ীডোম্বীপা।
◆ নিচে পদকর্তার নাম ও পদের সংখ্যা দেয়া হলো :
➺ কহ্নপা – ১৩ টি।
➺ ভুসুকুপা – ৮ টি।
➺ সরহপা – ৪ টি।
➺ কুক্কুরীপা – ৩ টি।
➺ লুইপা – ২ টি।
➺ শবরপা – ২ টি।
➺ শান্তিপা – ২ টি।
➺ অার্যদেব – ১ টি
➺ কঙ্কণ – ১ টি
➺ কম্বলাম্বর – ১ টি
➺ গুন্ডরীপা – ১ টি
➺ চাটিলপা – ১ টি
➺ জয়নন্দী – ১ টি
➺ ডোম্বীপা – ১ টি
➺ ঢেন্ঢণপা – ১ টি
➺ তন্ত্রী – ১ টি
➺ তাড়ক – ১ টি
➺ দারিক – ১ টি
➺ ধামপা – ১ টি
➺ বিরূপা – ১ টি
➺ বীণাপা – ১ টি
➺ ভদ্রপা – ১ টি
➺ মহীধরপা – ১ টি
➺ লাড়ীডোম্বীপা – ১ টি (পদটি পাওয়া যায় নি)
♨ চর্যাপদের বিষয়বস্তু :
◆ চর্যাপদ বিধৃত হয়েছে – বৌদ্ধধর্মের তত্ত্বকথা।
◆ চর্যার প্রধান তত্ত্ব – মহাসুখরূপ নির্বাণ লাভ।
◆ চর্যাপদের যে বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে – সাধন তত্ত্ব।
◆ চর্যার অনেকগুলো পদ মুলত – গানের সংকলন।
◆ চর্যাপদের রচনার উদ্দেশ্য – ধর্মচর্চা।
♨ চর্যাপদের ভাষা :
◆ দ্ব্যর্থক ও রূপকাত্মক ও অষ্পষ্টতার জন্য চর্যাপদের ভাষাকে – সন্ধ্যা ভাষা বা সান্ধ্য ভাষা বলে।
◆ চর্যাপদে মূলত ব্যবহৃত হয়েছে – প্রাচীন বাংলা ভাষা।
◆ ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, চর্যাপদের ভাষা – বঙ্গকামরূপী।
◆ চর্যাপদের ভাষায় প্রভাব রয়েছে – হিন্দি, মৈথিলী, অসমিয়া ও উড়িয়া ভাষার।
◆ চর্যাপদের কবিতাগুলো লেখা – মাত্রাবৃত্ত ছন্দে।
◆ চর্যাপদের ভাষা দুর্বোধ্য হওয়ার কারণ – তন্ত্র ও যোগের প্রতাপের জন্য।
♨ চর্যাপদের বাঙালি কবি :
◆ ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর মতে চর্যাপদের প্রাচীন কবি শবরপা ছিলেন – বাঙালি।
◆ বাঙালি চর্যাকার হিসেবে অনুমিত – লুইপা।
◆ তারানাথের মতে লুইপা বসবাস করেন – গঙ্গার ধারে।
◆ বেশিরভাগ পন্ডিতগণের মতে – ভুসুকুপাকে বাঙালি হিসেবে গণ্য করা হয়।
◆ বাঙালি চর্যাকারদের মতে – ভুসুকুপার রচিত পদ সর্বধিক (৮টি) পাওয়া যায়।
◆ প্রথম বাঙালি হিসেবে পূর্ণাঙ্গ পদ রচনা করেন – লুইপা।
♨ সহজিয়া সম্প্রদায় :
◆ সহজিয়া সম্প্রদায়ের সাধন পদ্ধতিকে বলা হয় – সহজযানপন্থী।
◆ সহজিয়া সম্প্রদায়ের সকলে – বৌদ্ধধর্মের অনুসারী।
◆ সহজিয়া সম্প্রদায় পৃথক – সাধন পদ্ধতির ভিন্নতার জন্য।
◆ সহজিয়া সম্প্রদায়ের সাথে ঘনিষ্ঠতা রয়েছে – বাউল সম্প্রদায়ের।
♨ চর্যাপদ অাবিষ্কার ও অাবিষ্কারক:
◆ চর্যাপদ অাবিষ্কার হয় – নেপালের রাজ দরবার থেকে, ১৯০৭ সালে।
◆ চর্যাপদ অাবিষ্কার করেন – ড. হরপ্রসাদ শাস্ত্রী।
◆ ড. হরপ্রসাদ শ্রাস্ত্রীর জন্ম – ৬ ডিসেম্বর ১৮৫৩ সালে।
◆ ড. হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর জন্ম – নৈহাটি, পশ্চিমবঙ্গ।
◆ ড. হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর অমরকীর্তি – বাংলা ভাষার প্রথম গ্রন্থ ‘চর্যাপদ উদ্ধার।
◆ তিনি চর্যাপদ অাবিষ্কারে সফল হন – তৃতীয়বারের চেষ্টায়।
◆ তিনি অারও উদ্ধার করেন – ‘ডাবার্ণব’ ও ‘দোহাকোষ’ নামক বই।
◆ তিনি সবগুলো বই প্রকাশ করেন – ‘হাজার বছরের পুরান বাঙালা ভাষায় বৌদ্ধগান ও দোহা’ নামে।

◆ ‘হাজার বছরের পুরান বাঙালা ভাষায় বৌদ্ধগান ও দোহা’ প্রকাশ পায় – বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে ১৯১৬ সালে।
◆ ড. হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর উপাধি – মহামহোপাধ্যায়।
◆ ড. হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ছিলেন – ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান।
◆ ড. হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর মৃত্যু – ১৭ নভেম্বর ১৯৩১ সালে।
♨ চর্যাপদের অন্যান্য তথ্য :
◆ চর্যাপদের প্রথম পদটি হচ্ছে – ‘কাঅা তরুবর পাঞ্চ বি ডাল/চঞ্চল চীএ পৈঠা কাল।
◆ চর্যাপদের অানুমানিক বয়স – প্রায় এক হাজার বছর।
◆ চর্যপদে প্রবাদ বাক্য পাওয়া যায় – ৬ টি।
◆ চর্যাপদের পদগুলো টীকার মাধ্যমে ব্যাখ্যা করেন – মুনিদত্ত।
◆ সর্বপ্রথম চর্যার ভাষাতাত্বিক পর্যালোচনা করেন – ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়। Origin and Development of the Bengali Language গ্রন্থে।
◆ চর্যাপদের ধর্মমত সম্পর্কে অালোচনা করেন – ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, ১৯২৭ সালে।
◆ চর্যাপদকে ভাষার অাদি নিদর্শন হিসেবে দাবি জানিয়েছে – হিন্দী, অাসামিয়া ও উড়িয়া ভাষা-ভাষীরা।

No comments:

Post a Comment