Tuesday, September 13, 2016

তাপ ও তাপগতিবিদ্যা

✿ তাপ ও তাপমাত্রা :
● তাপ এক প্রকার শক্তি – যা ঠান্ডা বা গরমের অনুভুতি জাগায়।
● ১ গ্রাম পানির তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধির জন্য যে তাপের প্রয়োজন হয় তাকে বলে – ১ ক্যালরি।
● ১ ক্যালরি = ৪.২ জুল।
● তাপমাত্রা হচ্ছে বস্তুর তাপীয় অবস্থা – যা অন্য বস্তুর তাপীয় সংস্পর্শে অানলে বস্তুটি তাপ গ্রজণ করবে না বর্জন করবে তা নির্ধারণ করে।
● ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ২৭৩ কেলভিন তাপমাত্রকে বলা হয় – প্রমাণ তাপমাত্রা।
● ৭৬০ মিমি চাপ বা ৭৬ সেমি চাপকে বলা হয় – প্রমাণ চাপ।
● -২৭৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ০ কেলভিন তাপমাত্রাকে বলে – পরম শূন্য তাপমাত্রা।
● পরম শূন্য তাপমাত্রায় গ্যাসের অায়তন – শূন্য।
● তাপমাত্রার বিভিন্ন স্কেল –
স্কেলের নাম – সংকেত – স্থিরাংক
→ সেন্টিগ্রেড – C – ০-১০০
→ ফারেনহাইট – F – ৩২-২১২
→ কেলভিন – K – 273-373
→ রোমার – R – 0-80
● তাপমাত্রার বিভিন্ন স্কেলের তুলনামুলক রাশিমালা – C/5= (F-32)/9=(K-273)/5=R/4
● ক্লিনিক্যাল থার্মোমিটার দাগ কাটা থাকে – ৯৫ ডিগ্রি থেকে -১১০ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত।
● মানব দেহের স্বাভাবিক উষ্ণতা বা তাপমাত্র হলো – ৯৮.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৩৬.৯ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
● তাপ প্রয়োগে পদার্থের প্রসারণ ক্রম – বায়বীয়>তরল>কঠিন।
● হরিকেনের গরম চিমনির উপর ঠান্ডা পানি পড়লে তা ফেটে যায় কারণ – কাঁচের কিছু অংশে অসম অায়তন সংকোচনের জন্য।
● পানির ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি – ৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায়।
● তারকাসমূহের তাপমাত্রা নির্ণয়ে ব্যবহৃত হয় – পাইরোমিটার।
● বাতাসের তাপমাত্রা কমে গেলে অার্দ্রতা – কমে যায়।
● ফারেনহাইট ও কেলভিন স্কেলে একই পাঠ দেয় তাপমাত্রায় – ৫৭৪.২৫ ডিগ্রিতে।
● ফারেনহাইট ও সেন্টিগ্রেড স্কেলে একই পাঠ দেয় যে তাপমাত্রায় – -৪০ ডিগ্রিতে
✿ বস্তুর উপর তাপ ও চাপের প্রভাব:
● চাপ প্রয়োগের ফলে কঠিনবস্তুর গলে যাওয়া এবং চাপ প্রত্যাহারে অাবার কঠিন অবস্থা প্রাপ্ত হওয়াকে বলে – পুনঃশীতলীকরণ।
● চাপে বরফের গলনাংক – কমে যায়।
● চাপ বাড়লে তরলের স্ফুটনাংক – বেড়ে যায়।
● চাপ কমলে স্ফুটনাংক – কমে।
● পৃথিবীর পৃষ্ঠ হতে যত উপরে উঠা যায় তত বায়ুর চাপ – কমতে থাকে।
● সাধারণ পাম্পে পানিকে যে উচ্চতার অধিক উঠানো যায় না – ৩৪ ফুট।
● কাচে ধাতব পাত সংযুক্ত প্লাটিনাম ব্যবকার করা হয় কারণ – কাচ ও প্লাটিনামের প্রসারাংক প্রায় সমান।
● পদার্থের গলনাংক নির্ভর করে – চাপের হ্রাস বৃদ্ধির উপর।
● শীতকালে নারকেলের তেল জমার কারণ – তেলের স্বভাবিক তাপমাত্রা গলনাংকের নিচে নেমে যায়।
● দুটি ঘরের তাপমাত্রা সমান কিন্তু অাপেক্ষিক অার্দ্রতা যথাক্রমে ৫০% এবং ৭৫ শতাংশ হলে তুলমামূলকভাবে অারামদায়ক হবে – প্রথম ঘরটি।
● এভারেস্ট পর্বত শৃঙ্গে পানি ফুটতে শুরু করে যে তাপমাত্রায় – ৭০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে।
● অাকস্মিক তাপমাত্রা হ্রাসের ফলে বাষ্প জমাট বেধে তৈরি হয় – তুহিন।
● ঠান্ডা ও গরম পানির মধ্যে তাড়াতাড়ি অাগুন নেভাতে সাহায্য করে – গরম পানি।
✿ ক্যালরিমিতি:
● কোন বস্তুর এক গ্রাম ভরের তাপমাত্রা ১ কেলভিন বাড়াতে যে তাপের প্রয়োজন হয় তাকে বলে – ঐ বস্তুর উপাদানের অাপেক্ষিক তাপ।
● কোন বস্তুর অন্তর্নিহিত তাপশক্তির পরিমাণ নির্ভর করে – বস্তুটির ভর, উপাদান এবং তাপমাত্রার উপর।
● স্থলভাগের তুলনায় সামুদ্রিক অঞ্চলের তাপমাত্রা অনেক ধীরে ধীরে বৃদ্ধি হ্রাস পায় কারণ – পানির অাপেক্ষিক তাপ মাটির চেয়ে বেশি।
● রাতে স্থলভাগ থেকে জলভাগের দিকে বায়ু প্রবাহিত হয় কারণ – সমুদ্রের পানির অাপেক্ষিক তাপ বেশি বলে তা অাস্তে অাস্তে ঠান্ডা হয়।
● পানির অাপেক্ষিক তাপ মাটির অাপেক্ষিক তাপের চেয়ে – পাঁচ গুণেরও বেশি।
✿ তাপ সঞ্চলন:
● তাপ সঞ্চালনের পদ্ধতি – তিনটি। যথা: বিকিরন, পরিবহন, পরিচলন।
● তাপের পরিবহনের জন্য প্রয়োজন – জড় মাধ্যম।
● তাপের পরিবাহকত্বের মান নির্ভরশীল – পরিবাহকের উপাদানের উপর।
● স্বচ্ছ বস্তুর মধ্য দিয়ে হয় তাপের – বিকিরন।
● তাপরোধী পদার্থ – মেঘ।
● তাপ বিকিরণ ও শোষণ করার ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি – কালো বস্তুর।
● তাপ বিকিরণ ও শোষণ করার ক্ষমতা সবচেয়ে কম – সাদা রঙের বস্তুর।
● পালিশ করা পৃষ্ঠের তাপ বিকিরণ করার ক্ষমতা – কম।
● যে সব পদার্থের মধ্যে দিয়ে তাপ সহজে পরিবাহিত হতে পারে, তাদেরকে বলে – সুপরিবাহী পদার্থ।
● সুপরিবাহী পদার্থের উদাহরণ – লোহা, তামা, অ্যালুমিনিয়াম।
● যে সব পদার্থের মধ্যে দিয়ে তাপ সহজে পরিবাহিত হতে পারে না, তাদেরকে বলে – কুপরিবাহী পদার্থ।
● কুপরিবাহী পদার্থের উদাহরণ – তুলা, কাচ, পশম।
● ০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রার পানির চেয়ে ০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রার বরফ – বেশি ঠাণ্ডা।
● যে সব বস্তু অাপতিত বিকীর্ণ তাপ প্রায় শোষণ করে তাদেরকে বলে – অাদর্শ কালো বস্তু। যেমন: ভূসা কয়লা, কালো প্লাটিনাম।
● ভূসা কয়লা প্রায় ৯৫% এবং কালো প্লাটিনাম প্রায় ৯৮% – বিকীর্ণ তাপ শোষণ করে।
● পুকুরের উপরের পানি ঠাণ্ডা এবং নিচের গরম মনে হয় – শীতকালে।
✿ তাপীয় যন্ত্র :
● যে যন্ত্র তাপশক্তিকে যান্ত্রিক শক্কিতে রূপান্তরিত করে তাকে বলে – তাপইঞ্জিল।
● তাপইঞ্জিনের উদাহরণ – পেট্রোল ইঞ্জিল, ডিজেল ইঞ্জিল, গ্যাস ইঞ্জিন।
● তাপীয় ইঞ্জিন – দুই প্রকার। যথা: অন্তর্দহ ও বহির্দহ।
● যে ইঞ্জিনে জ্বালানির দহন ক্রিয়া ইঞ্জিনের মূল অংশের বাইরে ঘটে, তাকে বলে – বহির্দহ ইঞ্জিন।
● যে ইঞ্জিনে জ্বালানির দহন ক্রিয়া ইঞ্জিনের মূল অংশের ভিতরে ঘটে কাকে বলে – অন্তর্দহ ইঞ্জিন।
● অ্যারোপ্লেনের ইঞ্জিন – অন্তর্দহ ইঞ্জিনের উদাহরণ।
● সর্বপ্রথম পেট্রোল ইঞ্জিন অাবিস্কার করেন – ড. অটো, ১৮৮৬ সাল।
● পেট্রোল ইঞ্জিনের দক্ষতা – প্রায় ৩০%।
● ফ্রেয়ন এক প্রকার রাসায়নিক পদার্থ, যার রাসায়নিক নাম ডাইক্লোরো ডাইফ্লোরো মিথেন।
● ফ্রেয়নের বাণিজ্যিক নাম – F-22
● ইঞ্জিনের উত্তাপ কম রাখার যন্ত্র – রেডিয়েটর।
● ইঞ্জিনের কার্বুরেটরের কাজ – পেট্রোলকে বাষ্পে পরিণত করা।
● চতুর্ঘাত ইঞ্জিনের উদাহরণ – পেট্রোল ইঞ্জিন।
● সর্বাপেক্ষা বেশি দক্ষতাসম্পন্ন ইঞ্জিন – বৈদ্যুতিক মোটর।
তাপ বিজ্ঞানের কতিপয় ব্যবহারিক প্রয়োগ :
✿ রেফ্রিজারেটর কমপ্রেসরের কাজ — ফ্রেয়নকে বাষ্পে পরিণত করা।
✿ এক গ্রাম পানির তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি হতে ৩০ ডিগ্রি বৃদ্ধির জন্য তাপের প্রয়োজন – ১০ ক্যালরি।
✿ কার্বুরেটর থাকে – পেট্রোল ইঞ্জিনে।
✿ প্রসার কুকারে রান্না তাড়াতাড়ি হয় – কারণ উচ্চচাপে তরলের স্ফুটনাংক বৃদ্ধি পায়।
✿ পাহাড়ের উপর রান্না করতে বেশি সময় লাগে – বায়ুর চাপ কম থাকার কারণে।
✿ ফারেনহাইট ও সেলসিয়াসের স্কেলে সমান তাপমাত্রা নির্দেশ করে – ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রায়।
✿ মাটির পাত্রে পানি ঠান্ডা থাকে – কারণ মাটির পাত্র পানির বাষ্পীভবনে সাহায্য করে।
✿ অাকাশে মেঘ থাকলে গরম বেশি লগে – মেঘ পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে বিকীর্ণ তাপকে ওপরে যেতে বাধা দেয় বলে।
✿ প্রেসার কুকারে পানির স্ফুটনাংক – বেশি হয়।
✿ চা তাড়াতাড়ি ঠান্ডা হয় – কালো রঙের কাপে।
✿ পর্বতের চূড়ায় অারোহণ করলে নাক দিয়ে রক্তপাত হতে পারে, কারণ উচু পর্বত চূড়ায় – বায়ুর চাপ কম।
✿ রান্নার করার পাতিল সাধারণত অ্যালুমিলিয়াম তৈরি হয়, এদের প্রধান কারণ – এতে দ্রুত তাপ সঞ্চারিত সঞ্চারিত হয়ে খাদ্যদ্রব্য তাড়াতাড়ি সিদ্ধ হয়।
✿ মেঘাচ্ছন্ন অাকাশে রাত অপেক্ষাকৃত গরম হয় – মেঘ মাটি থেকে বায়ুতে তাপ বিকিরণে বাথা দেয়।
✿ যে রঙের বস্তুর তাপ শোষণ ক্ষমতা কম – সাদা
✿ স্ফুটন শুরু হওয়ার পর পানি জীবাণুমুক্ত হয় – ১৫-২০ মিনিট ধরে স্ফুটন করলে।
✿ পাহাড়ের চূড়ায় পানির স্ফুটনাংক কমে যায় কারণ ঐ উচ্চতায় – বায়ুর চাপ কম।
কাপড়ের তাপ বিকিরণ ও শোষণ করার ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি – কালো রঙের।
✿ তাপ সঞ্চালনের দ্রুততম প্রক্রিয়া – বিকিরণ।
✿ ক্রমশ ব্যারোমিটারে পারদের উচ্চতা বৃদ্ধি – ভালো অাবহাওয়ার ইঙ্গিত।
✿ শীতকালে শরীরের চামড়া ফাটে — অার্দ্রতার অভাবে।
✿ রেললাইনের ফিস প্লেট – দুইটি রেলকে সংযুক্ত করে।
✿ বিকীর্ণ তাপ নির্ভর করে – তরঙ্গের তীব্রতার উপর।
✿ তাপ প্রয়োগে সবচাইতে বেশি প্রসারিত হয় – বায়বীয় পদার্থ।
✿ সূর্য থেকে পৃথিবীতে তাপ অাসে বিকিরণ পদ্ধতিতে।
✿ মেঘলা রাতে – শিশির উৎপন্ন হয় না।
✿ ভূপৃষ্ঠ হতে উপরে উঠলে শরীর ফেটে রক্ত পড়ে – সেখানে বায়ুর চাপ ভূপৃষ্ঠ হতে কম বলে।
✿ শীতকালে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ – কম থাকে।
✿ একটি বদ্ধ ঘরে একটি চালু ফ্রিজের দরজা খুলে রাখলে ঘরের তাপমাত্রা – অপরিবর্তিত থাকবে।
✿ শীতে শরীর কাঁপে – শরীরের তাপের চেয়ে বাহিরের তাপ কম বলে।
✿ শীতকালে ঠোট ও গায়ের চামড়া ফেটে যায় – বাতাসের অাপেক্ষিক অার্দ্রতা কম বলে।
✿ গ্রীষ্মকালে অামরা গরম কাপড় পরিনা কারণ – কালো কাপড় শরীরের তাপকে বাইরে যেতে বাধা দেয় না।
✿ ফ্যান চালালে অামরা ঠান্ডা অনুভব করি, কারণ ফ্যান – শরীর থেকে বাষ্পীভবনের হার বাড়িয়ে দেয়।
✿ বর্ষাকলে ভেজা কাপড় শুকাতে দেরি হয় – কারণ বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকে।
✿ রেফ্রিজারেটরে ব্যবহৃত হয় – অ্যামোনিয়া ও ফ্রেয়ন।
✿ ফারেনহাইট স্কেলে পানির স্ফুটনাংক -২১২ ডিগ্রি।
✿ শীতকালে ভিজা কাপড় তাড়াতাড়ি শুকায় – বাতাসে জলীয়বাষ্প কম থাকে।
✿ পরম শূন্য তাপমাত্রার সমান – – ২৭৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস
✿ শহরের রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ সাধারণত সাদা ছাতা ও সাদা জামা ব্যবহার করে – তাপ বিকিরণ থেকে বাচার জন্য
✿ মোটরগাড়ির ইঞ্জিনকে ঠান্ডা রাখার জন্য পানি ব্যবহার করা হয়, কারণ – তাপ শোষণ করলেও পানির উষ্ণতা অল্প বৃদ্ধি পায়।
✿ তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে কার্বনের রোধ – হ্রাস পায়।
✿ শীতকালে অামাদের দেশে ভিজা কাপড় দ্রুত শুকায় এবং গায়ের চামড়া বা ঠোট ফেটে যায় – অাপেক্ষিক অার্দ্রতা কম থাকে বলে।
✿ সমান তাপমাত্রা দিলে দুধ পানি অপেক্ষা অাগে ফোটে – দুধের তাপগ্রহীতা বেশি বলে।

No comments:

Post a Comment