eBongBD.com

"All about things for easy life"
This is a website about solution of our daily problems. You can get here all Problem's solution.

Breaking

পড়ার টেবিলে বসার পূর্বে ১০ মিনিট হাঁটলে বা হালকা ব্যায়াম করলে মস্তিষ্কের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এতে পড়া মনে রাখতে বেশ সুবিধা হয়।

Sunday, January 22, 2017

বিশ্ব পরিবেশ দিবস

(সংকেত: ভূমিকা; পরিবেশ দিবস; বিশ্ব পরিবেশ দিবসের প্রয়াস; বিশ্ব পরিবেশ দিবসের কর্মসূচী; পরিবেশ দিবসের উদ্দেশ্য; পরিবেশ দূষণের ভয়াবহতা; পরিবেশ দিবসের গুরুত্ব; পরিবেশ দিবস ও বাংলাদেশ; বাংলাদেশে পরিবেশ দিবসের কর্মসূচী; উপসংহার।)

পরিবেশ দিবস
ভূমিকা: মানব সভ্যতার ক্রমবিকাশের সাথে মানুষ গড়ে তুলেছে তার পরিবেশ। পরিবেশই প্রাণের ধারক ও বাহক। আর মানুষের উপযোগী এই পরিবেশ ক্রমবিবর্তনের ফলে অর্জিত হয়েছে। কিন্তু আজ এই পরিবেশ বিভিন্ন সংকটের মুখোমুখি। এই সংকট বিশেষ কোনো গোষ্ঠী, দেশ বা জাতির নয়; সমগ্র মানবজাতির। প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট বিভিন্ন কর্মকান্ডের ফলে পরিবেশ আজ বিপন্ন। আর তাই পরিবেশের নানা দুষণ ও সমস্যা দূর করে পৃথিবীকে মানুষের বসবাসযোগ্য হিসাবে গড়ে তোলাই আমাদের কাম্য।

পরিবেশ দিবস: মানুষ তার নিজের চেষ্টা সাধনা দ্বারা নানা কিছু জয় করেছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ফলে আজ মানুষ গভীর সাগরতল থেকে মহাশূন্যে আধিপত্য বিস্তার করছে। মানুষ ও অন্যান্য প্রাণির নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে পরিবেশের সাথে। আর এই পরিবেশ নানা কারণে দূষিত হচ্ছে। এই দূষণ আমাদের কঠিন থেকে কঠিনতর অবস্থার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এ ভয়াবহতার কথা স্মরণ করে সচেতন হচ্ছে বিশ্বের মানুষ। এরই ধারাবাহিকতায় ৫ জুনকে বিশ্ব পরিবেশ দিবস হিসাবে ঘোষণা করে জাতিসংঘ। জাতিসংঘ প্রতিবছর বিভিন্ন বিষয়কে সামনে রেখে এর প্রতিপাদ্য ঠিক করে থাকে। দিবসটির ২০১৪ সালের এর প্রতিপাদ্য ছিল- ''Raise your voice, not the sea level'' অর্থাৎ ‘হতে হবে সোচ্চার, সাগরের উচ্চতা বাড়াবো না আর।’ 

বিশ্ব পরিবেশ দিবসের
বিশ্ব পরিবেশ দিবসের প্রয়াস: ঊনিশ শতকের শেষের দিকে পরিবেশ দূষণের মাত্রা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে থাকে। এর ফলে পরিবেশ বিজ্ঞানী ও গবেষকরা পরিবেশ বিপর্যয় নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন। এই সূত্র ধরেই ১৯৯২ সালের ৩ জুন থেকে ১৪ জুন ব্রাজিলের রাজধানী রিওডি জেনেরোতে বিশ্ব পরিবেশ শীর্ষক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেয় শিল্পোন্নত দেশসহ বিশ্বের ১৭০টি দেশের প্রতিনিধিরা। এই সম্মেলনে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যকার বৈষম্য ভুলে গিয়ে আগামী প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ বিশ্ব গড়ে তোলার অঙ্গীকার করা হয়। পরিবেশ দূষণে উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশগুলোর তুলনায় শিল্পোন্নত দেশগুলোর ভূমিকা অনেক বেশি। তাই শিল্পোন্নত দেশগুলো পদক্ষেপ না নিলে পরিবেশ দূষণ রোধ করা সম্ভব না। 

বিশ্ব পরিবেশ দিবসের কর্মসূচী: বিশ্ব পরিবেশ দিবস আন্তর্জাতিকভাবে ঘোষিত একটি দিবস। সারা বিশ্বের মানুষ এই দিবসটিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে থাকে। এতে সমসাময়িক দুর্যোগ, দুষণের ভয়াবহতা নিয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়। এছাড়াও র‌্যালী, আলোচনা সভা, পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা, বৃক্ষরোপণ ও বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমেও সচেতনতা সৃষ্টি করা হয়। চলতি বছরে বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তন ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পরিবেশ দিবসে বিশেষভাবে আলোচনার জন্য নির্ধারিত হয়েছে। জাতিসংঘ ও অন্যান্য দেশ আলোচনা সাপেক্ষে বছরব্যাপী পরিবেশ সংরক্ষণের কর্মসূচী গ্রহণ করে। 

পরিবেশ দিবসের উদ্দেশ্য: পরিবেশকে বাঁচানোই পরিবেশ দিবসের মূল উদ্দেশ্য। মানুষের বসবাস উপযোগী বিশ্ব গড়ার লক্ষ্যে চাই দূষণমুক্ত পরিবেশ। তাই বিভিন্ন উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে পরিবেশ দিবস পালন করা হয়। নিম্নে বিশ্ব পরিবেশ দিবসের উদ্দেশ্যগুলো তুলে ধরা হলো- 

- সকল দেশের জাতীয় পরিবেশ নীতির সফল বাস্তবায়ন করা। 
- বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা। 
- অবকাঠামো নির্মাণের ক্ষেত্রে পরিবেশগত প্রভাব বিবেচনা করা। 
- বৃক্ষরোপণ ও বন সংরক্ষণে গুরুত্বারোপ করা। 
- কৃষি কাজে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার কমানো। 
- শিল্পবর্জ্য যথাযথভাবে পরিশোধন নিশ্চিতকরণ। 
- উপকূলীয় বনায়ন সম্প্রসারিত করা। 
- প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন।
- পরিবেশ সংরক্ষণে ব্যাপকভাবে প্রচার ও সম্প্রসারণ।
- সর্বোপরি পরিবেশ সম্পর্কে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা। 

পরিবেশ দূষণে ভয়াবহতা
পরিবেশ দূষণে ভয়াবহতা: আজ পরিবেশ বিভিন্ন কারণে দূষণের ভয়াবহতার শিকার হচ্ছে। পরিবেশের প্রত্যেকটি উপাদানেরই নির্দিষ্ট ধারণ ক্ষমতা আছে। আর যখন দূষণ ধারণ ক্ষমতার বাইরে চলে যায় তখনই ভারসাম্য হারায় পরিবেশ। নগরায়ন, শিল্পায়ন, বনভূমি উজাড়, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, জমিতে সার ও কীটনাশক ব্যবহার, গাড়ির বিষাক্ত ধোঁয়া প্রভৃতি কারণে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। দূষণের ভয়াবহতার কবলে পড়ছে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ। এই দূষণের কারণে পৃথিবী থেকে আজ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণি বিলুপ্ত হয়ে পড়েছে। বাতাসে প্রতিবছর ২০ কোটি টন কার্বন মনোঅক্সাইড সঞ্চিত হচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতে বৃষ্টির পানিতে এসিডের পরিমাণ বাড়ছে। পৃথিবীর ৮০ শতাংশ নতুন নতুন রোগের সৃষ্টির কারণ পরিবেশ দূষণ। বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন পরিবেশের এই ভয়াবহ দূষণে পৃথিবী পৃষ্ঠের বহু জায়গা বন্যায় প্লাবিত হবে ও তুষারপাতে জমাট বেঁধে যাবে। 

পরিবেশ দিবসের গুরুত্ব: শুধু সভা-সমাবেশ, বক্তৃতা বা আলোচনাই পরিবেশ দিবসের লক্ষ্য নয়। প্রয়োজন দিনটির গুরুত্ব উপলব্ধি করা। বিশ্বের প্রতিটি দেশ দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে এবং দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ায় ব্রত হয়। মানুষ পরিবেশের ভয়ানক চিত্র সম্পর্কে জানতে পারে। এর ফলে পূর্ব ব্যবস্থা বা পরিকল্পনার মাধ্যমে দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়তে আগ্রহী হয়। বিভিন্ন দেশে সরকার ও জনগণ পরিবেশ রক্ষার কাজে হাত লাগিয়েছে। পরিবেশ দিবস উদযাপনের আহ্বান মূলত বিশ্ববাসীকে দূষণবিরোধী কাজে ঝাপিয়ে পড়ার আহ্বান। তাই এই দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। 

পরিবেশ দিবস ও বাংলাদেশ: পৃথিবীর পরিবেশ সংরক্ষণ ও দুষণমুক্ত রাখতে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও প্রতিবছর বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন করে থাকে। বৈষ্ণিক উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশের ভূমিকা অত্যন্ত নগণ্য হলেও ভৌগলিক অবস্থানের কারণে সর্বোচ্চ ক্ষতির সম্মুখীন বাংলাদেশ। তাই বাংলাদেশের জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে পরিবেশ দিবসের গুরুত্ব অনেক। 

বাংলাদেশে বিশ্ব পরিবেশ দিবসের কর্মসূচী: বিশ্ব পরিবেশ দিবসের সাথে একাত্ব হয়ে বাংলাদেশ প্রতিবছর বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে থাকে। বর্তমানে পরিবেশ রক্ষার্থে জনগণের সক্রিয়তার কথা বলা হচ্ছে। দূষণের কুফল ও পরিবেশ রক্ষার সংবাদ নিয়ে জাতীয় দৈনিকগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রচার করছে। তাছাড়া পরিবেশ সংরক্ষণে বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। যেমন: বন সংরক্ষণ, বনায়ন, বৃক্ষরোপণ, পরিবেশ পরিচ্ছন্নকরণ ইত্যাদি। 
উপসংহার: বর্তমানে নানা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে পৃথিবী ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আজ মানুষ পরিবেশ দূষণের ভয়াবহতা থেকে বাঁচতে চায়। তাই বিশ্বকে বসবাসযোগ্য করার লক্ষ্যে দূষণমুক্ত বিশ্ব গড়ার অঙ্গিকার নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।

No comments:

Post a Comment