১৯৪২ সালের কথা। বিশ্বজুড়ে তখন চলছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা। ড. হ্যারি কুভার কাজ করছিলেন মিত্র বাহিনীর হয়ে। তিনি এমন একটি প্লাস্টিক গান সাইট (Gun Sight) বানাতে চাইছিলেন যা মিত্র বাহিনীর সৈন্যরা ব্যবহার করতে পারবে। কাজ করতে করতে তিনি এক ধরনের অ্যাডহেসিভ উদ্ভাবন করে ফেললেন যা খুব দ্রুততার সাথে অত্যন্ত শক্তিশালী বন্ধন গড়ে দিতে সক্ষম। কিন্তু বর্তমান প্রজেক্টের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ না হওয়ায় ড. কুভার তখন সেই অ্যাডহেসিভটি নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামালেন না।
ড. হ্যারি কুভার
এরপর কেটে গেলো প্রায় নয় বছর। ১৯৫১ সালের কথা, ড. কুভার তখন কাজ করতেন ইস্টম্যান কোডাক কোম্পানিতে। সেখানে জেট প্লেনের ককপিটের উপরের আচ্ছাদনের জন্য তাপ প্রতিরোধী এক্রিলেট পলিমার বানানোর এক প্রজেক্টের সুপারভাইজর ছিলেন তিনি। সেখানেই কাজ করতে করতে একদিন ফ্রেড জয়নার নামক আরেক গবেষকের সাথে পুনরায় সেই নয় বছর আগেকার অ্যাডহেসিভ উদ্ভাবন করেন তারা। যখন তারা এটি একজোড়া রিফ্রাক্টোমিটার প্রিজমের মাঝে লাগালেন, তখন বিস্ময়ের সাথে দেখলেন যে, ওগুলো অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে একে অপরের সাথে লেগে গিয়েছে। এবার আর নিজের উদ্ভাবিত অ্যাডহেসিভ সায়ানোঅ্যাক্রিলেটকে অবজ্ঞা করতে পারলেন না কুপার। এর মাঝে লুকিয়ে থাকা অপার সম্ভাবনা এতদিনে তিনি ঠিকই বুঝতে পারলেন।
১৯৫৮ সালে অবশেষে সুপার গ্লু বাজারে আনে ইস্টম্যান কোডাক কোম্পানি, নাম ‘Eastman #910’। পরবর্তীতে অবশ্য তারা ‘সুপার গ্লু’ নাম ব্যবহার শুরু করে। সেখান থেকেই আজ আমরা জিনিসটিকে এ নামেই চিনি।
সুপার গ্লু
হাতের দুই আঙুলে সুপার গ্লু লেগে যদি আঙুলই জোড়া লেগে যায় তবে কী করবেন? খুব সহজেই কিন্তু এটি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। হালকা গরম পানিতে আপনার হাতটি কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রাখুন। দেখবেন কিছুক্ষণ পর নিজ থেকেই আপনার আঙুল দুটি আলাদা হয়ে গেছে। তবে তখন গরম পানিতে হাত ডুবিয়ে আবার আঙুল টানাটানি করতে যাবেন না, কারণ তাহলে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা আছে। তবে গরম পানির এই কৌশল কাজ না করলে গ্লু লেগে থাকা জায়গাটিতে অ্যাসিটোন (নেইল পলিশ রিমুভারেই থাকে) লাগাতে পারেন যা গ্লু ছাড়াতে সাহায্য করবে।
No comments:
Post a Comment