বিদ্বানের দোয়াতের কালি শহিদের রক্তের চেয়েও পবিত্র।
বিদ্যা অমূল্য সম্পদ। আর বিদ্বান ব্যক্তি মানবতার মুক্তির পথপ্রদর্শক। বিদ্বান ব্যক্তির দেখানো পথেই সমাজ ও রাষ্ট্র উন্নতির পথে এগিয়ে চলে। অন্যদিকে সত্য ও ন্যায়ের প্রতিষ্ঠায় যাঁরা অকাতরে প্রাণ বিসর্জন দেন তাঁরা শহিদ। সকল ধর্মে এবং সমাজে শহিদ ব্যক্তি মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত। ইসলাম ধর্মে শহিদদের মর্যাদার কথা স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে। হযরত মুহাম্মদ (স.) শহিদের রক্তের চেয়েও বিদ্বানের কলমের কালিকে পবিত্র বলে আখ্যায়িত করেছেন। বিদ্বান ব্যক্তিকে গভীর সমুদ্রে ভাসমান জাহাজের নাবিকের সাথে তুলনা করা যায়। নাবিক যেমন জাহাজকে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে দিতে পারে, তেমনি সমাজের মধ্যে বিদ্যমান বৈষম্যকে লাঘব করতে পারেন একজন বিদ্বান ব্যক্তি। তিনি তাঁর জ্ঞানের আলোয় সমাজের অন্ধকার দূর করতে পারেন। বিদ্যাই মানুষের মধ্যে ভালো-মন্দ, ন্যায়-অন্যায়, উচিত-অনুচিতের বোধ তৈরি করে। সক্রেটিস, প্লেটো, এরিস্টটল, জন কীটস, শেকস্পিয়র, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, গ্যাব্রিয়েল গর্সিয়া মার্কেজ, বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন, সুকান্ত ভট্টাচার্য প্রমুখ মহান ব্যক্তি সময়ে সময়ে কালে কালে এসে মানবতার মুক্তির গান গেয়েছেন। বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন যেমন নারী জাগরণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন তেমনি ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল, মাদার তেরেসাও মানবতার মুক্তির জন্য কাজ করে গেছেন। বিদ্বান ব্যক্তিরা শুধুমাত্র তাদের লেখনীর মাধ্যমে নয় বরং কর্ম দ্বারা নিজেদের ভূমিকার অপরিহার্যতা প্রমাণ করে দিয়ে গেছেন। বিদ্বান ব্যক্তি গোটা সমাজটাকেই পরিবর্তন করে দিতে পারেন, পারেন নতুন নতুন সম্ভাবনার দ্বারকে উন্মুক্ত করতে। অন্যদিকে একজন শহিদ ব্যক্তি কেবল সত্য ও ন্যায়কে প্রতিষ্ঠা করতে পারেন। এ কারণে বিদ্বান ব্যক্তির গুরুত্ব শহিদের চেয়ে বেশি।
শিক্ষা: মানবতার মুক্তির অগ্রপথিক বিদ্বানের ভূমিকা শহিদের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমাদের সকলকেই প্রকৃত বিদ্বান হতে হবে।
No comments:
Post a Comment