eBongBD.com

"All about things for easy life"
This is a website about solution of our daily problems. You can get here all Problem's solution.

Breaking

পড়ার টেবিলে বসার পূর্বে ১০ মিনিট হাঁটলে বা হালকা ব্যায়াম করলে মস্তিষ্কের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এতে পড়া মনে রাখতে বেশ সুবিধা হয়।

Thursday, September 20, 2018

১০০ মনীষীর জীবনী হযরত উসমান ইব্‌ন আফ্‌ফান (রাঃ)  উসমান ইব্‌ন আফফান (রাঃ) ইসলামের তৃতীয় খলিফা । তিনি মক্কার বিখ্যাত বানু উমায়্যা গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন । তিনি এই বংশের আবুল আসীর পৌত্র ছিলেন । রাসূল (সঃ) এর নবুওয়ত লাভের প্রথম দিকেই হিজরাতের বেশ পূর্বে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন । উমায়্যাগন অনেক পরে ইসলাম গ্রহণ করিলেও ব্যক্তিগতভাবে হযরত উসমান (রাঃ) এই সৎ সাহসের জন্য প্রসিদ্ধি লাভ করেন । তিনি একজন ধনী ব্যবসায়ী ( সেহেতু তাহকে উসমান গনী বলা হইত) এবং সামাজিক খ্যাতি ও যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তি ছিলেন । তিনি সৌন্দর্য ও শালীনতার প্রতীক ছিলেন । রাসূল (সঃ) এর কন্যা রুকায়ার সহিত তাঁহার বিবাহ ইসলাম গ্রহণের পর সঙ্ঘটিত হয় এবং তিনি বিবাহের পর পত্নীসহ আবিসিনিয়ায় হিজরত করেন (শিবলী, সীরাতুন্নাবী ২খ, ৪২৬) । হযরত উসমান (রাঃ) আবিসিনিয়াতে মুসলিমগণের দুইটি হিজরাতেই অংশগ্রহণ করেন । তৎপর মদিনায় মুহাজিরগণের সহিত মিলিত হন। তাঁহার স্ত্রী পিড়িটা থাকায় তিনি বাঁদরের যুদ্ধে যোগদান করিতে পারেন নাই । হযরত রুকায়্যার (রাঃ) মৃত্যুর পর রাসূল (সঃ) হযরত উসমান (রাঃ) এর সহিত তাঁহার অপর এক কন্যা উম্মু কুলছুমের বিবাহ দেন । এই কারণে তাহাকে যুন-নুরাইন (দুই জ্যোতির অধিকারী) বলা হইত । হযরত উমার (রাঃ) ইন্তিকালের পূর্বে খলীফা নির্বাচনের উদ্দেশ্যে বিশিষ্ট যে ছয়জন সাহাবীর সমন্বয়ে একটি মাজলিস গঠন করিয়াছিলেন হযরত উসমান (রাঃ) ছিলেন তাহাদের অন্যতম । তাহারা সর্বসম্মতিক্রমে উসমান (রাঃ) কে খলীফা পদে মনোনীত করেন । হযরত উসমান (রাঃ) তাঁহার খিলাফাতকালে কুরআন ও সুন্নাহ্‌র নীতি অনুসরণ করেন । হযরত উসমান (রাঃ) এর খিলাফাতের সপ্তম বৎসরে মুসলিমদের প্রথম অন্তবিরোধ আরম্ভ হয় । এবং স্বয়ং খলীফা এই বিরোধ বহ্নিতে শাহাদাত বরন করেন । আরব ঐতিহাসিকগণ এই ব্যাপারে খলীফার বিরুদ্ধবাদীগণের অভিযোগসমূহ লিপিবদ্ধ করিয়াছেন (আত-তাবারীকৃত আর রিয়াদুন নাদিরাঃ ফী মানাকিবিল আশারাঃ , কায়রো ১৩২৭ হিঃ, ২খ ১৩৭-১৫২ পুস্তকে ইহার বিস্তারিত আলোচনা আছে )। তাঁহার বিরুদ্ধে প্রথম এবং প্রধান অভিযোগ ছিল এই যে, তিনি তাঁহার আত্মীয় স্বজনগণকে প্রাদেশিক শাসঙ্কর্তার পদে নিযুখ করিয়াছিলেন । বাস্তবিকপক্ষে এই শাসনকর্তাদের অধিকাংশই উয্রত উমার (রা;) এর সময়েই নিযুক্ত হইয়াছিলেন । হযরত উমার (রাঃ) এর সময়েই প্রাদেশিক শাসনকর্তাগণের স্বাতন্ত্র্য-প্রিয়তার জন্য তাহাদিগকে খলীফার ক্ষমতাধীনে রাখা ক্রমশ দুরূহ হইয়া উঠিতেছিল । কিন্তু হযরত উমার (রাঃ) তাঁহার ব্যক্তিত্ব প্রভাবে প্রাদেশিক শাসনকর্তাগনকেও আয়ত্তে রাখিতে সক্ষম হইয়াছিলেন । হজরত উসমানের নমনীয়তার সুযোগ লইয়া তাঁহার গোত্রীয় আত্মীয়-স্বজনগণ তাঁহার উপর প্রাধান্য বিস্তার করে । তাঁহার বিরুদ্ধে আর একটি অভিযোগ এই ছিল যে, তিনি বিজয়লব্ধ ধন-সম্পত্তির একাংশ তাঁহার আত্মীয় স্বজনকে দান করিয়াছিলেন । উসমানী খিলাফাতের পূর্বে যে মধ্যপ্রাচ্যের অমুসলিম দেশগুলির বিরুদ্ধে যে জিহাদ চলিতেছিল, তাহাতে যে “মালু’ল গানীমা” পাওয়া যাইত তাহা সমস্ত সৈনিকের মধ্যে বণ্টন করিয়া দেওয়া হইত । ইহা হইতে কিছু কিছু অংশ বিশেষভাবে বিশিষ্ট ব্যক্তিগণকে দেওয়া হইত । হযরত উসমান (রাঃ) জনগনের সম্পদ হইতে অন্যায়ভাবে কাহাকেও কিছু দেন নাই । ব্যক্তিগত সম্পদ হইতে অনেক সময় আত্মীয় স্বজনকেও দান করিতেন । হযরত উসমান (রাঃ) হযরত আবু বকর (রাঃ) সংগৃহীত কুরআন মজিদের প্রামাণ্য অনুলিপি প্রস্তুত করাইয়া প্রাদেশিক শাসনকর্তাগণের নিকট পাঠাইয়া দেন এবং আঞ্চলিক পাঠ বৈষম্যযুক্ত অনুলিপিগুলি জ্বালাইয়া ফেলিতে আদেশ দেন । হযরত উসমান (রাঃ) এর এই কার্যের উদ্দেশ্য ছিল যে, বিস্তীর্ন মুসলিম খিলাফাতে প্রচলিত আরবী বাক-রীতির অনুপ্রবেশে যেন কুরআনে পাঠ-বৈষম্যের সৃষ্টি না হয় । অথচ ইহাকেও তাঁহার বিরুদ্ধবাদীরা আন্দোলনের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে । হযরত উসমান (রাঃ) এর সময়ে অশান্তির ঘটনা প্রবাহের সংক্ষিপ্ত বিবরণ এইরূপঃ হযরত উসমান (রাঃ) এর দ্বাদশ বর্ষব্যাপী খিলাফাতকাল দুই অংশে বিভক্ত । প্রথম ছয় বৎসরে (২৩-২৯) শান্তি বিরাজ করে এবং শেষ ছয় বৎসর (৩০-৩৫) অশান্তির কাল । এই বিদ্রোহ ও ষড়যন্ত্রের কেন্দ্র ছিল মিসর । সেই সমুদয় ইহুদী যাহারা শুধু মৌখিকভাবে লোক দেখানোর জন্য ইসলাম গ্রহণ করিয়াছিল । এই ষড়যন্ত্রকারী দলের নেতা ছিল মুসলমান ছদ্মবেশী ইহুদী সন্তান আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা । সানআর অধিবাসী আব্দুল্লাহ ইব্‌ন সাবা ইসলাম গ্রহণের কিছুকাল পর মদিনায় আসিয়া বসবাস আরম্ভ করিল । হযরত আলী (রাঃ) এর নাম নিয়া হযরত উসমান (রাঃ) এর বিরুদ্ধে মুসলমানদিগকে উসকাইতে লাগিল । ইহার পর সে বসরায় গিয়া একই প্রক্রিয়ায় উসমান (রাঃ) এর বিরুদ্ধে জনসাধারণকে উত্তেজিত করিতে লাগিল । তারপর কুফা ও দামেস্কে গিয়া একই কাজ করিতে লাগিল । অবশেষে মিসরে পৌঁছাইয়া জনসাধারণকে এত উত্তেজিত করিয়া তুলিল যে, তাঁহারা উসমান (রাঃ) কে নিহত করাকেই জাতির স্বার্থে সর্ববৃহৎ কর্ম বলিয়া মনে করিতে লাগিল । কিছুকাল যাবত এইরূপ দুর্যোগের যে মেঘ পুঞ্জীভূত হইতেছিল ৩৫ হিঃ এর শেষে তাঁহার বইঃপ্রকাশ ঘটিল । বিভিন্ন প্রদেশের বিদ্রোহীগণ মদিনার দিকে যাত্রা করে । সর্বপ্রথম আসে মিসরীয়গণ । খলীফার সহিত সাক্ষাতে তাঁহার তাহাদের অভিযোগসমূহ অতিশয় তীব্র ভাষায় প্রকাশ করে । কিন্তু খলীফার নম্র এবং শান্ত ব্যবহারে তাঁহার প্রশমিত হয় । খলীফা তাহাদিগের সমস্ত দাবী মানিয়া লন । কিন্তু পথিমধ্যে আল-আরীশ নামক স্থানে হযরত উসমান (রাঃ) এর এক দূত ধরা পড়ে এবং তাঁহার নিকট একটি পত্র পাওয়া যায় । ইহা মিসরের গভর্নর আব্দুল্লাহ ইবনে সা’দের নিকট লিখিত ছিল । পত্রে আন্দোলনের এই নেতৃবৃন্দকে দেশে প্রত্যাবর্তনের পর মৃত্যুদণ্ড দিতে কিংবা অঙ্গচ্ছেদ করিতে বলা হইয়াছিল । এই পত্র হস্তগত হওয়ায় ফলে বিদ্রোহীগণ ক্রোধান্বিত হইয়া প্রতিশোধ গ্রহণের উদ্দেশ্যে মদিনায় ফিরিয়া আসে । হযরত উসমান (রাঃ) এই পত্র তাঁহার লিখিত বলিয়া অস্বীকার করেন এবং ইহা তাঁহার শতুগনের দুরভিসন্ধিমূলক কার্য বলিয়া অনুমান করেন । অবশেষে লেখার পদ্ধতিতে ধরা পড়িল যে, ইহা মারওয়ানের লেখা । হযরত আলী (রাঃ) ও অপরাপর সাহাবাগন আপ্রাণ চেষ্টা করিলেন যাহাতে বিদ্রোহীগণ মদীনা ত্যাগ করিয়া চলিয়া যায় । বিদ্রোহীগণ বুঝিতে পারিল যে চিঠি সত্যই উসমানের (রাঃ) লেখা নয় । তথাপিও তাহারা উসমান (রাঃ) এর খিলাফাত ত্যাগের জন্য আন্দোলন চালাইয়া গেল । বিদ্রোহীগণ হযরত উসমান (রাঃ) কে গৃহে অবরুদ্ধ করিয়া রাখে । হযরত উসমান (রাঃ) বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে সাহাবীগণকে নিষেধ করেন । কিন্তু তাহাদের কেহ কেহ আপন পুত্রগণকে হযরত উসমান (রাঃ) এর গৃহদ্বারে প্রহরী নিযুক্ত করেন । হযরত আইশা (রাঃ) এই সময়ে মক্কায় হাজ্জ করিতে গিয়াছিলেন । হযরত উসমান (রাঃ) নিজ মর্যাদায় অবিচলিত থাকিয়া ঘোষণা করিয়া দিলেন যে, তিনি কোন অবস্থাতেই খিলফাত ত্যাগ করিবেন না । কয়েকদিন এইরূপ অবরোধের পর কতিপয় ব্যক্তি ৩৫ হিঃ (জুন ৬৫৬) মুহাম্মদ ইব্‌ন আবী বকরের নেতৃত্বে খলিফার গৃহাভ্যন্তএর প্রবেশ করিয়া তাহাকে আক্রমণ করে । খলিফা এই সময় কুরআন পাঠ করিতেছিলেন । তাঁহার রক্ত কুরআনের উপর ছিটকাইয়া পড়ে । তাঁহার কাল্‌ব গোত্রীয়া স্ত্রী নাইলা বিন্‌ত ফুরাফিসা আহত হন । খলীফার শাহাদাতের পর রাত্রে অতি গোপনীয়তার সহিত তাঁহার মৃতদেহ কয়েকজন আত্মীয় দাফন করেন । মু’আবিয়া (রাঃ) সিরিয়া হইতে খলীফাকে সাহায্য করিবার মানসে একদল সৈন্য প্রেরণ করিয়াছিলেন । পথে খলফার নিহত হওয়ার সংবাদ পাইয়া আবার তাঁহার সিরিয়ায় ফিরিয়া যায় । এই হত্যাকাণ্ডের ফলে ইসলামের রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় একতা নষ্ট হইয়া যায় এবং ধর্মীয় মতবিরোধ ও গৃহযুদ্ধের যুগ আরম্ব হয় । হযরত উসমান (রাঃ) এর খিলাফাত এবং ইহার রক্তাক্ত সমাপ্তি ইসলামের ইতিহাসে একটি করুন ও যুগান্তকারী ঘটনা । ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে, হযরত উসমান (রাঃ) অত্যাধিক নির্মল চরিত্রসম্পন্ন ছিলেন এবং সরলপ্রাণ ব্যক্তি ছিলেন । নম্রতা, ধর্মপ্রানতা ইত্যাদি গুণাবলী তাঁহার চরিত্রের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য ছিল । কোরআন সঙ্কলনের বিশেষ অবদানের জন্য তাহাকে জা’মেউল কোরআন উপাধি দেয়া হয় । হাদিসে আছে রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলিয়াছেন “ বেহেশতে প্রত্যেক নবীরই সঙ্গী থাকিবে । আমার সঙ্গী হইবে উসমান ।” Developed by 

No comments:

Post a Comment