সাধারন চশমা বা আইগ্লাস আবিষ্কারের গল্প তো আপনাদের শুনিয়েছি। আজ শোনাবো সানগ্লাস বা রৌদ-চশমা’র গল্প। রৌদ- চশমা নামটা শুনলে প্রথমেই মনে হবে যেন রৌদে পরার জন্য যে চশমা ব্যবহার করা হয় তাকেই সান গ্লাস বা রৌদ- চশমা বলা হয়। কিন্তু তা নয়। রৌদকে আটকানোর জন্য রৌদ চশমার প্রচলন হয়নি। একটি বিশেষ কারণেই চৈনিক নির্মাতারা ধোয়াচ্ছন্ন লেন্সের চশমা প্রথম তৈরী করেন। ১৩০০ সালের দিকে এই চশমা প্রথম তৈরী করা হয়। চোখের দৃষ্টি ত্রুটি অথবা সূর্যালোক প্রতিহত করতে নয় চীনের বিচারালয়ের জজ সাহেবদের চোখের দৃষ্টিকে আড়াল করতে এই চশমা ব্যবহার করা হয়।
চীনাদের উদ্ভাবনী শক্তি দেখে তাদের স্যালুট না করে পারিনা। একশত বছর ধরে সানগ্লাসের ব্যবহার শুধু বিচারালয়ে হতে থাকলো। ১৪৩০ সালের দিকে রৌদ- চশমা চীন থেকে ইতালীতে পাড়ি জমালো। তারাও বিচারিক কাজে রৌদ- চশমা ব্যবহার করত।
আঠারো শতকের মধ্যভাগে জেমস আয়ুসকফ চশমার অস্বচ্ছ লেন্স নিয়ে গবেষনা শুরু করলেন। আয়ুসকফ বিশ্বাস করতেন নীল অথবা সবুজ অস্বচ্ছ কাঁচ নির্দিষ্ট দৃষ্টি ত্রুটি নিরাময় করতে সক্ষম হবে। সূর্যালোককে প্রতিহত করার কোন চিন্তা ভাবনা তার মাথায় ছিলো না। বিংশ শতাব্দীতে এসে রৌদ- চশমা প্রাণ পায়। আমেরিকার মিলিটারি সানগ্লাস টেকনোলজির উন্নয়ন ও ব্যবহারে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। ১৯২৯ সালে আধুনিক ধরনের রৌদ- চশমার আবির্ভাব ঘটে। ১৯৩০ সালে ফস্টার গ্রান্ট কোম্পানীর প্রতিষ্ঠাতা স্যাম ফস্টার আটলান্টিক সিটিতে ফস্টার গ্রান্ট সানগ্লাসের প্রথম জোড়া বিক্রি করেন। সত্তর দশকে হলিউড তারকারা রৌদ- চশমা ব্যবহারের জন্য রীতিমত বিখ্যাত ছিলেন।
ইতিহাসের পাতা ছেড়ে বর্তমান জমানায় নেমে আসি। সিনেমা-টিভির তারকা, খেলার মাঠের খেলোয়ার, ভ্রমনপিপাসু পর্যটক সবার চোখে রৌদ- চশমা। রৌদ- চশমা’র কদর এখনো কমেনি।
No comments:
Post a Comment