নীতিমালা
প্রতিবন্ধী বিষয়ক নীতিমালা
বাংলাদেশের সংবিধানে প্রতিবন্ধী বিষয়ক নীতিমালা
প্রতিবন্ধী বিষয়ক জাতীয় নীতিমালা
প্রতিবন্ধী বিষয়ক নীতিমালা
জাতিসংঘ কর্তৃক পরিচালিত সমীক্ষায় দেখা যায় যে, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০% লোক কোন না কোনভাবে প্রতিবন্ধী। যদি সার্বিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের সংখ্যা হিসাব করা হয় তবে এই সংখ্যা ২৫%-এ উন্নীত হতে পারে। সমীক্ষায় এও জানা গেছে যে, উন্নয়নশীল দেশে অন্তত ৮০% প্রতিবন্ধী গ্রামঞ্চলে বসবাস করে। অপর্যাপ্ত প্রতিরোধ ও নিরাময় ব্যবস্থার কারণে এই হার ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিবন্ধী মূলত শারীরিক, মানসিক, দৃষ্টি, শ্রবণ ইন্দ্রিয়ের ক্ষতির কারণে হয়ে থাকে৷ প্রতিবন্ধিত্বের কারণে-প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বিদ্যামান সকল নাগরিক অধিকার ও সুবিধাদি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। প্রতিবন্ধিত্বের কারণে তাদেরকে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বাধা হিসাবে মনে করা হয়। প্রতিবন্ধী বিষয়ে যথাযথ কর্মসূচি গ্রহণের জন্য প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সম্পর্কিত জাতিসংঘের বিশ্ব কর্ম-পরিকল্পনা কর্তৃক প্রদত্ত প্রতিবন্ধিত্বের সংজ্ঞা পথ নির্দেশক হিসেবে বিবেচনা করা যায়।
প্রতিরোধ ঃ মানসিক, শারীরিক, স্নায়ুগত প্রতিবন্ধিত্ব দূরীকরণে বা দুর্বলতা দূরীকরণে গৃহীত পদক্ষেপ অথবা শারীরিক, মানসিক কিংবা সামাজিক নেতিবাচক ঘটনা যখন পরিলক্ষিত হয় উহা দূরীকরণে গৃহীত পদক্ষেপ।
দুবলতা ঃ একজন স্বাভাবিক ব্যক্তির কর্মকাণ্ড সম্পাদনে অসমর্থতা অথবা অস্বাভাবিকতা।
প্রতিবন্ধীত্ব ঃ যে কোন ধরণের বাঁধা অথবা একজন স্বাভাবিক মানুষের দ্বারা সম্পাদনযোগ্য কাজ সম্পাদনে অসুবিধা।
অক্ষমতা ঃ কোন ব্যক্তির অসুবিধাসমূহ, যা তার প্রতিবন্ধীত্বের অথবা দুর্বলতার কারণে ঘটে, যা বয়স, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং লিঙ্গভেদে ঐ ব্যক্তির স্বাভাবিক ভূমিকার অন্তরায়।
পুনর্বাসন ঃ লক্ষ্য ভিত্তিক ও সময়-নির্ধারিত এমন কিছু পদ্ধতি যা এক জন দুর্বল ব্যক্তিকে মানসিক, শারীরিক এবং/অথবা সামাজিকভাবে স্বাভাবিক পর্যায়ে উত্তরণ ঘটায়।
সুযোগের সমতা বিধান ঃ এই প্রক্রিয়ায় প্রচলিত সাধারণ সামাজিক অধিকার ও সুযোগসমূহ যেমনঃ শারীরিক, সাংস্কৃতিক, পরিবেশ, আবাসন এবং যানবাহন, সমাজ ও স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, কর্মসংস্থান, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক জীবন, খেলাধুলা এবং বিনোদনমূলক সুযোগ-সুবিধাসমূহ সকলের জন্য সহজলভ্য করে।
বাংলাদেশের সংবিধানে প্রতিবন্ধী বিষয়ক নীতিমালা
বাংলাদেশের সংবিধানে সকল নাগরিকের স্বাস্থ্য পরিচর্যা, শিক্ষা, কর্মের অধিকার এবং সামাজিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়েছে। এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রতিবন্ধীদের পূর্ণ অংশগ্রহণ এবং সমতা বিধান (১ঌঌ৩) শীর্ষক এসকাপ ঘোষণা পত্রে স্বাক্ষর দান ও প্রতিবন্ধীদের অধিকার শীর্ষক জাতিসংঘের কার্যবিবরণী (১ঌ৭৫) অন্তর্ভুক্ত করণের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকাণ্ডে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী বর্ষ (১ঌ৮১), প্রতিবন্ধী দশক (১ঌ৮৩-ঌ২), প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার সনদ (২০০৬)এবং প্রতিবন্ধী সার্ক বর্ষ (১ঌঌ৩) কর্ম-পরিকল্পনা নীতি নির্দেশক হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশ জাতিসংঘের উদ্যোগে ২০০০ সাল নাগাদ সকলের জন্য শিক্ষা ও ২০০০ সাল নাগাদ সকলের জন্য স্বাস্থ্য ঘোষণা পত্রের স্বাক্ষরদাতা দেশ৷ বাংলাদেশের প্রতিবন্ধী বিষয়ক জাতীয় নীতিমালা-প্রণয়নের মূল উপাদান হচ্ছে সকলের পূর্ণ অংশগ্রহণ ও সমসুযোগ নিশ্চিতকরণ যা বাংলাদেশের সংবিধানে এবং প্রতিবন্ধী সংক্রান্ত রচিত আন্তর্জাতিক সিদ্ধান্ত এবং ঘোষণাসমূহ বাংলাদেশ সরকার গ্রহণ করেছে।
আন্তর্জাতিক সিদ্ধান্ত এবং ঘোষণাপত্রসমূহঃ
প্রতিবন্ধীদের অধিকার সংক্রান্ত জাতিসংঘ সিদ্ধান্ত (১ঌ৭৫)- প্রতিবন্ধিত্ব প্রতিরোধ পুনর্বাসন এবং প্রতিবন্ধীদের পূর্ণ অংশগ্রহণ ও সহঅধিকার সম্পর্কীয় লক্ষ্যমাত্রা অর্জন। এসকাপ ঘোষণাপত্র (১ঌঌ৩) এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রতিবন্ধীদের পূর্ণ অংশগ্রহণ ও সমঅধিকার।
No comments:
Post a Comment