eBongBD.com

"All about things for easy life"
This is a website about solution of our daily problems. You can get here all Problem's solution.

Breaking

পড়ার টেবিলে বসার পূর্বে ১০ মিনিট হাঁটলে বা হালকা ব্যায়াম করলে মস্তিষ্কের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এতে পড়া মনে রাখতে বেশ সুবিধা হয়।

Wednesday, April 18, 2018

যাতায়াতেই খরচ হয় প্রতিবন্ধী চাকরিজীবীদের বেতনের বড় অংশ


তাসকিনা ইয়াসমিন ১৭:৪৭ , ডিসেম্বর ১০ , ২০১৭

প্রতিবন্ধী রুমানা আক্তার থাকেন আজিমপুরে, তার অফিস ধানমন্ডি। তিনি অফিস থেকে বেতন পান মাত্র ৫ হাজার টাকা। যেখানে প্রতিদিন তার যাতায়াত খরচ ১২০ টাকা। বেতনের বেশিরভাগ টাকাই চলে যায় এই খাতে। তবু রুমানা এই অবস্থা মেনে নিয়েছেন কারণ, বাংলাদেশের পরিবহন ব্যবস্থা প্রতিবন্ধীদের যাতায়াতবান্ধব হয়নি। কেবল রুমানা নন, এই একই অবস্থার মধ্যে শিক্ষা, কর্মজীবন চালিয়ে যেতে হচ্ছে প্রতিবন্ধীদের।

বাসে উঠছেন এক প্রতিবন্ধী (ছবি: সংগৃহীত)
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ১ শতাংশ প্রতিবন্ধী। যা সংখ্যার হিসেবে ১৫ লাখ ৪০ হাজার। প্রতিবন্ধীরা বলেছেন, ‘দেশে প্রতিবন্ধী সুরক্ষা আইন থাকলেও বাস্তবায়ন নেই। নেই নিরাপদে চলাচলের সুবিধা। কর্মক্ষেত্রে টয়লেট, বিল্ডিংয়ে চলার জন্য র‌্যাম্প, যানবাহন সুবিধা পান না তারা। পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার সুযোগও নেই।’

উইমেন উইথ ডিজ্যাবিলিটি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের (ডাব্লিউডিডিএফ) চেয়ারপারসন শিরিন আখতার নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, ‘আমি দেড় বছর বয়সে দৃষ্টিশক্তি হারাই। মা আমাকে ১৯৮৩ সালের দিকে জোর করে স্কুলে ভর্তি করে দেন। আমাকে শিক্ষকরা স্কুলে ভর্তি নিতে চায়নি। পরে পরিবারের সহায়তায় এসএসসি প্রথম বিভাগে পাস করি। এরপর বদরুন্নেসা মহিলা কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হতে চাইলে অন্য শিক্ষকরা রাজি হন কিন্তু প্রিন্সিপাল রাজি ছিলেন না। পরে সেই প্রিন্সিপাল ট্রান্সফার হলে আমার ভর্তি হয়। এরপর আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংলিশে অনার্স এবং মাস্টার্স করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই আমি এখন ডাব্লিউডিডিএফ-এ রয়েছি। এখানে প্রায় ৪ হাজার নারীকে আমরা স্বাবলম্বী করতে কাজ করছি। অথচ আমারই বেতনের বড় অংশই রাষ্ট্রের দায়িত্বহীনতার কারণে যাতায়াত খরচে চলে যায়। তারপরও আমি নিরুপায়। আমাকে এসবের মধ্যেই থাকতে হবে। এখন আমি আমার মা, ভাই-বোনের সঙ্গে থাকি। সেই দায়িত্বগুলো পালনের দায়ও আছে।’
কথা হয় বাংলালিংকের এক্সিকিউটিভ শারীরিক প্রতিবন্ধী গোলাম মাওলার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ঢাকা শহরে যাতায়াত খুব কষ্ট। বাসে ওঠা যায় না, হেলপার হাসাহাসি করে। সিএনজিতে যাতায়াত খরচও অনেক বেশি। রাষ্ট্র যদি সংবেদনশীল হয় তাহলে আমাদের বাড়তি খরচগুলো করতে হয় না, আরেকটু স্বচ্ছলভাবে চলতে পারতাম।’

টার্নিং পয়েন্ট ফাউন্ডেশনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এবং ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের ডিজ্যাবিলিটি এক্সপার্ট জীবন উইলিয়াম গোমেজ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রথমত প্রতিবন্ধীদের চলাচল ঢাকা শহরের রাস্তা, ফুটপাত, ওভারব্রিজ কোনওখানেই সহজ নয়। এসব জায়গায় সব ধরনের প্রতিবন্ধী অসুবিধার মধ্যে পড়েন। প্রতিবন্ধীদের জীবন সহজ করতে এসব ব্যবস্থার দিকে মনোযোগ দিতে হবে।’
কেন এখনও যাতায়াতটা সহজ করে দেওয়া সম্ভব হলো না প্রশ্নে সেন্টার ফর সার্ভিসেস অ্যান্ড ইনফরমেশন অন ডিজ্যাবিলিটির (সিএসআইডি) নির্বাহী পরিচালক খন্দকার জহুরুল আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রতিবন্ধীদের যাতায়াতের বিষয়টি সবচেয়ে অবহেলিত সেক্টর। প্রতিবন্ধীদের জন্য বাস, ট্রেন, লঞ্চ কোথাও পর্যাপ্ত সুবিধা নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিবন্ধীদের বিষয়টি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দেখবে। তারা কখনোই যোগাযোগ মন্ত্রণালয় বা বেসরকারি বাস মালিকদের প্রতিবন্ধীদের বিষয়টা বোঝাতে সক্ষম হয় না। যার কারণে প্রতিবন্ধীদের সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। বিদেশের ফুটপাতগুলো অনেক সুন্দর থাকে। সেখানে নির্দিষ্ট স্থানে বাস থামে। প্রতিবন্ধীর জন্য র‌্যাম্প বের হয়ে আসে, সে হুইলচেয়ার নিয়ে উঠে যায়। বাংলাদেশে এসব ব্যবস্থা একেবারে শূন্য।’

/ইউআই/এমও/

No comments:

Post a Comment