বেকিং সোডা শুধু বেকিং এর জন্যই নয়, বরং ঘরদোরের অনেককিছু পরিষ্কার করতেও কাজে লাগে। কিন্তু রূপচর্চাতেও যে বেকিং সোডার বিভিন্ন ধরণের ব্যবহার আছে আপনি কি তা জানেন? আপনার ত্বক, চুল থেকে শুরু করে দাঁত-নখ পর্যন্ত রূপচর্চায় ব্যবহৃত হতে পারে বেকিং সোডা। জেনে নিন কী করে ব্যবহার করবেন বেকিং সোডা। আর এটাও জেনে নিন কোন পরিস্থিতিতে বেকিং সোডা ব্যবহার করা উচিৎ নয়।
১) হ্যান্ড ওয়াশ
রান্নাবান্না বা খাওয়ার পর হাত খুব বেশি তেলতেলে হয়ে থাকলে সাবান ব্যবহার করেও তেল কাটানো যায় না। এক্ষেত্রে অল্প একটু বেকিং সোডা মিশিয়ে নিতে পারেন পানির সাথে। এটা তেল কাটিয়ে ফেলবে সহজেই।
২) ড্রাই শ্যাম্পু
ড্রাই শ্যাম্পু হলো চুলের তেলতেলে ভাব দূর করার সহজ এবং দ্রুত একটি প্রক্রিয়া। চুল ধোয়ার ঝামেলায় না গিয়েও চুল ঝরঝরে করে ফেলতে ড্রাই শ্যাম্পু হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন বেকিং সোডা। কয়েক চিমটি বেকিং সোডা ঘষে নিন আপনার চুলের গোড়ায়। এরপর চিরুনি চালিয়ে এটা চুল থেকে ঝেড়ে ফেলুন। চুলের অতিরিক্ত তেল শুষে নেবে।
৩) ডিওডোরেন্ট
কেমিক্যাল ডিওডোরেন্ট যে স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয় তা বলাই বাহুল্য। প্রাকৃতিক ডিওডোরেন্ট হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন বেকিং সোডা। আপনার ত্বক বেশি সেনসিটিভ হয়ে থাকলেও এটা কাজে আসবে। অল্প করে বেকিং সোডা ছিটিয়ে নিতে পারেন বগলে। এতে দুর্গন্ধমুক্ত থাকতে পারবেন অনেকটা সময়।
৪) টিথ হোয়াইটেনার
দাঁতে বিভিন্ন কারণে দাগ পড়তে পারে। খুব দ্রুত এই দাগ দূর করার জন্য বেকিং সোডা এবং পানি দিয়ে একটা পেস্ট তৈরি করে লাগাতে পারেন। তবে এতে দাঁত পাকাপাকিভাবে সাদা হয়ে যাবে না।
৫) ফেসিয়াল স্ক্রাব
তিন ভাগ বেকিং সোডা এবং এক ভাগ পানি মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করুন এবং সেটা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে মুখে ম্যাসাজ করুন। এরপর ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। খুব ভালোভাবে এক্সফলিয়েট করবে এটা। এছাড়াও আপনার ফেস ওয়াশের সাথে কিছুটা বেকিং সোডা মিশিয়ে সেটাও ব্যবহার করতে পারেন। যাদের ত্বক বেশি সেনসিটিভ তারা এক টেবিল চামচ মধু এবং এক চা চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
৬) নেইল হোয়াইটেনার
সবসময় নেইল পলিশ ব্যবহার করার ফলে নখে একটা হলদেটে ভাব চলে আসতে পারে। এই হলদেটে ভাবটা দূর করতে কাজে আসতে পারে বেকিং সোডা। বেকিং সোডা আর হাইড্রোজেন পারক্সাইড একসাথে মিশিয়ে ছোট একটা ব্রাশের সাহায্যে নখে লাগাতে পারেন। ৩-৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
৭) পেডিকিওর
বাসায় অনেকেই পেডিকিওর করে থাকেন। পেডিকিওরের সময়ে পা ভেজানোর পানিতে অল্প করে বেকিগ্ন সোডা মিশিয়ে নিলে গোড়ালির চুলকানি দূর হবে, নরম হবে মোটা চামড়া। মরা চামড়া উঠতে না চাইলে বেকিং সোডার পেস্ট তৈরি করে সেখানে লাগাতে পারেন।
৮) মেকআপ ব্রাশ ক্লিনার
মেকআপ ব্রাশও যে পরিষ্কার রাখতে হয় এটা আমরা ভুলে যাই। এ কারণে দেখা যায় ব্রণের উপদ্রব এবং বিভিন্ন চর্মরোগ। মেকআপ ব্রাশ ধুয়ে রাখার জন্য হালকা গরম পানিতে কয়েক চা চামচ বেকিং সোডা দিয়ে নিতে পারেন।
৯) ব্রেথ ফ্রেশনার
এসিডিক খাবার খেলে অনেক সময়ে মুখে বাজে গন্ধ হয়ে যায়। এই গন্ধ দূর করতে বেকিং সোডার অ্যালকালাইন বৈশিষ্ট্য কাজ করতে পারে। গরম পানিতে এক চা চামচ বেকিং সোডা দিয়ে তা দিয়ে কুলি করলে দূর হয়ে যাবে মুখের দুর্গন্ধ।
যা করবেন না কখনোই:
বেকিং সোডা কখনোই শ্যাম্পু হিসেবে ব্যবহার করবেন না। ইদানিং ইন্টারনেটে শ্যাম্পু হিসেবে বেকিং সোডা এবং পানির একটি পেস্ট খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কারণ হিসেবে বলা হয়, এই মিশ্রণটি চুলে জমে থাকা বিভিন্ন প্রোডাক্ট দূর করতে সক্ষম। বেকিং সোডা আসলেই এসব প্রোডাক্ট দূর করে কিন্তু এর পাশাপাশি তা চুলের পিএইচ ব্যালান্সও নষ্ট করে। বারবার বেকিং সোডা দিয়ে চুল ধোয়া হলে তা চুলের বড় ক্ষতি করতে পারে।
No comments:
Post a Comment