eBongBD.com

"All about things for easy life"
This is a website about solution of our daily problems. You can get here all Problem's solution.

Breaking

পড়ার টেবিলে বসার পূর্বে ১০ মিনিট হাঁটলে বা হালকা ব্যায়াম করলে মস্তিষ্কের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এতে পড়া মনে রাখতে বেশ সুবিধা হয়।

Friday, September 21, 2018

১০০ মনীষীর জীবনী আল বাত্তানী (৮৫৮-৯২৯ খ্রিঃ)  যে মুসলিম মনীষী সর্ব প্রথম নির্ভুল পরিমাপ করে দেখিয়ে ছিলেন যে, এক সৌর বৎসরে ৩৬৫ দিন ৫ ঘন্টা ৪৬ মিনিট ২৪ সেকেন্ড হয়, তার আসল নাম হলো আবু আব্দুল্লাহ ইবনে জাবির ইবনে সিনান আল বাত্তানী। তিনি আল বাত্তানী নামেই বেশি পরিচিত। তাঁর সঠিক জন্ম তারিখ জান যায় নি। যতদুর জানা যায় ৮৫৮ খ্রিষ্টাব্দে মেসোপটেমিয়ার অন্তর্গত ‘বাত্তান’ নামক স্থানে তিনি জন্ম গ্রহণ করেন। জন্মস্থনের নামেই তিনি বিশেষ ভাবে খ্যাতি লাভ করেন। তাঁর পিতার নাম জাবির ইবনে সানান। তাঁর পিতাও ছিলেন তৎকালীন সময়ের একজন বিখ্যাত পন্ডিত ও বিজ্ঞানী। আল বাত্তানী পিতার নিকটই প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। শৈশব কাল থেকেই শিক্ষা লাভের প্রতি তাঁর ছিল প্রবল আগ্রহ। তিনি যে শিল্প কর্মেই হাত দিতেন তা নিখুঁত ভাবে শুরু করতেন এবং এর ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া ও ফলাফল গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করতেন। পিতার নিকট প্রাথমিক শিক্ষা লাভের পর উচ্চ শিক্ষার জন্যে তিনি ইউফ্রেটিস নদির নিকটবর্তী রাক্কা নামক শহরে গমন করেন। মাত্র ২০ বছর বয়সেই তিনি জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও পন্ডিত হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সমর্থ হন। আল বাত্তানীর বয়স যখন মাত্র ৫ বছর খলিফা মুতাওয়াক্কিলের ইন্তেকাল হয়। পরবর্তীতে দেশের রাজনৈতিক উত্থান পতনের কারণে তরুণ বয়সেই তিনি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন এবং সিরিয়ার গভর্নর পদে অধিষ্ঠিত হন। রাষ্ট্রীয় কাজের চরম ব্যস্ততার মধ্যেও তিনি জ্ঞান বিজ্ঞান সাধনার কোন ক্ষতি করেননি। রাজধানী রাক্কা ও এস্টিয়োক থেকে তিনি জ্যোতির্বিজ্ঞানে গবেষণা চালাতেন। তিনি ছিলেন একজন অংক শাস্ত্রবিদও। জ্যোতির্বিজ্ঞানে চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ, নক্ষত্র প্রভৃতির প্রকৃতি, গতি ও সৌরজগৎ সম্পর্কে তাঁর সঠিক তথ্য শুধুমাত্র অভিনবই নয়, জ্যোতির্বিজ্ঞানে টলেমী সহ পূর্বত বহু বৈজ্ঞানিকের ভুলও তিনি সংশোধন করে দেন। সূর্য ও চন্দ্র গ্রহন সম্পর্কিত টলেমী যে মতবাদ ব্যক্ত করেছিলেন, আল বাত্তানী তা ভূল বলে সম্পূর্ণ বাতিল কএ দিতে সক্ষম হন। তিনি প্রমণ করে দেখিয়েছেন যে সূর্যের আপাত কৌণিক ব্যাসারর্ধ বাড়ে ও কমে। নতুন চন্দ্র দেখার ব্যাপারে তিনি সম্পূর্ণ নতুন ও নির্ভুল বক্তব্য পেশ করেন। সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণ সম্পর্কেও তাঁর বক্তব্য সুস্পষ্ট। আল বাত্তানী তাঁর নতুন উদ্ভাসিত যন্ত্র দিয়ে প্রমাণ করে দিলেন যে, সূর্য স্থির বলে এতদিন ধরে প্রচলিত টলেমীর মতবাদটি সত্য নয়। সূর্য তার নিজস্ব অক্ষে গতিশীল। আল বাত্তানী আরো প্রমণ করন যে,টলেমীর সময় থেকে তাঁর সময় পর্যন্ত সূর্যের ১৬.৪৭ বৃদ্ধি পেয়েছে। সুতরাং স্থির নিশ্চল নয় এবং তার নিজস্ব কক্ষে গতিশীল। আল বাত্তানী টলেমীর প্রচারিত আরো বহু মতবাদকে ভুল বলে প্রমাণ করেন। তিনি অক্ষর মালাকে সংখ্যার প্রতীক হিসেবে ব্যবহারমূল্ক একটি ‘জিজ’ তালিকা তৈরি করেন। এটি এউরোপীয় পন্ডীতদের দ্বারা অনুদিত হয়ে ৩ খন্ডে প্রকাশিত হয়। আল বাত্তানীই সর্ব প্রথম আবিষ্কার করেন যে, ত্রিকোণমিতি হচ্ছে একটি স্বয়ং স্বাধীন বিজ্ঞান। তিনি গোলাকার ত্রিকোণমিতির কিছু সমস্যার অত্যন্ত বিস্ময়কর সমাধান দিয়েছেন। অন্যান্য বৈজ্ঞানিকগণ ত্রিকোণমিতির প্রতি এতদিন অমনোযোগী ছিলেন। আল বাত্তানীর অসাধারণ প্রতিভার সংস্পর্শে নির্জীব ত্রিকোণমিতি সজীব হয়ে উঠে। সাইন, কোসাইনের সাথে ট্যানজেন্টের সম্পর্ক আল বাত্তানীই প্রথম আবিষ্কার করেন। ত্রিভুজের বাহুর সঙ্গে কোণের ত্রিকোণমিতি সম্পর্কও তাঁর আবিষ্কার। বাত্তানী সর্ব প্রথম অংক শাস্ত্রে বহু গ্রন্থ রচনা করেন। গ্রীক স্বর গ্রামের পরিবির্তে লম্বের ব্যবহার করেন। এক কথায় আল বাত্তানীর জীবন ছিল জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় বিস্তৃত। তাঁর জ্যোতির্বিজ্ঞান, ত্রিকোণমিতি ও অংকশাস্ত্রের বহু মূল্যবান গ্রন্থ ইউরোপে বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছ। এ মহান মনীষী ৯২৯ খ্রিষ্টাব্দে ৭২ বছর বয়সে পরলোক গমন করেন। Developed by 

No comments:

Post a Comment