eBongBD.com

"All about things for easy life"
This is a website about solution of our daily problems. You can get here all Problem's solution.

Breaking

পড়ার টেবিলে বসার পূর্বে ১০ মিনিট হাঁটলে বা হালকা ব্যায়াম করলে মস্তিষ্কের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এতে পড়া মনে রাখতে বেশ সুবিধা হয়।

Thursday, September 20, 2018

হো চি মিন

ভিয়েতনামের স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা হো চি মিন। তিনি ভিয়েতনামের স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত লড়াই করেছেন জনগণের মুক্তি, স্বাধীনতা ও অধিকারের জন্য। বিপ্লবী এই নেতা জন্মগ্রহণ করেন ১৮৯০ সালের ১৯ মে। সুদীর্ঘ সংগ্রামী জীবনে হো চি মিন বিশ্ববাসীর কাজে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নামে পরিচিত হন। নগুয়েন ভ্যান কুং, নগুয়েন তাত থান, নগুয়েক আই কুয়োক, লাই সই, ভূয়ং সন নিহি, লিনভ এবং হো চি মিন এতগুলো নাম ছিল তার। প্রথম দুটি ছিল ছদ্ম নাম। কিন্তু হো চি মিন নামেই বিশ্ববাসীর কাছে শেষ পর্যন্ত পরিচিত হয়ে থাকলেন তিনি। তার বাবার নাম ছিল নগুয়েন হুই ওরফে নগুয়েন সিন সাক। নগুয়েন সিন সাকের জন্ম ক্ষেতমজুর পরিবারে। দারিদ্র্যের জীবন সিন সাকের পছন্দ ছিল না। তীব্র মানসিক যন্ত্রণায় তিনি ভাবতেন দাসত্বের জীবন থেকে মুক্ত হওয়ার উপায়। তিনি উপায় হিসেবে শিক্ষাকেই বেছে নিলেন এবং হো চি মিনের মা হোয়াং আই লোয়ানও পরিশ্রমী নারী ছিলেন। আজীবন সংগ্রামী নেতা হো চি মিনের জীবন সংগ্রাম শুরু হয় শৈশব থেকেই। তার বাবার আর্থিক অবস্থা তেমন সচ্ছল ছিল না। তাই দারিদ্র্যের নির্মমতা তিনি শৈশব থেকেই প্রত্যক্ষভাবে নিজের জীবন দিয়ে উপলব্ধি করেন। তাকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করার সময় নাম দেয়া হলো নগুয়েন তাত থান। এ সময় তার বয়স ছিল দশ। তবে এ সময় তারা গ্রাম ছেড়ে বাবার শিক্ষকতা পেশা শুরু করার জন্য হুয়েং শহরে এসে পড়ে। সংসারে তিন ভাই বোনের খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হতো হো চি মিনের বাবার। প্রচণ্ড পরিশ্রম করতে হতো হো চি মিনের মায়ের। এভাবে মা প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে মারা যায় হো চি মিনের মা। মানসিকভাবে প্রচণ্ড ভেঙে পড়েন তিনি। তার বাবাও হতাশায় পড়েন। ঠিক করা হলো হো চি মিনকে আবারো গ্রামে পাঠিয়ে দিবেন। হুয়েং শহর ছেড়ে হো চি মিন আবারো চলে গেল তার প্রিয় সবুজ ঘেরা গ্রামে। ১৯০৪ সালে তরুণ হো চি মিন দ্বিতীয়বার পাড়ি জমালেন হুয়েং শহরে। গ্রামে থাকার সময় তিনি উপলব্ধি করেন তাকে আরো অনেক জানতে হবে। পুঁথিগতবিদ্যার পাশাপাশি জানতে হবে নিজের সমাজ, মানুষ এবং মানুষের আশা-আকাক্সক্ষা সম্পর্কে। ১৯০৭ সালে হো চি মিন বিদ্যালয়ের শেষসীমা বেশ কৃতিত্বের সঙ্গেই শেষ করেন। এ সময়ই শুরু হয় সারা ভিয়েতনামজুড়ে খণ্ড খণ্ড ফরাসিবিরোধী বিক্ষোভ আন্দোলন। এই আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিল দেশের মাটি থেকে বিদেশিদের সম্পূর্ণ উচ্ছেদ করা। বিদেশি শাসন-শোষণ আর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে সাধারণ মানুষ এ আন্দোলন করতে বাধ্য হয়েছিল। এ আন্দোলনে হো চি মিনের বাবা নগুয়েন সাকও যোগ দেন। পরিণতি হিসেবে শাসনগোষ্ঠী অন্যান্য আন্দোলনকারীর সঙ্গে তাকেও গ্রেফতার করে। পরে ফরাসি শাসকগোষ্ঠী সিন সাককে আটকে রাখে পৌলো বন্দর কারাদ্বীপে। বাবা গ্রেফতার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শেষ হয়ে গেল হো চি মিনের ছাত্রজীবন এবং শুরু হলো প্রত্যক্ষ সংগ্রামী জীবন। এ সময় তিনি হুয়েং শহর ত্যাগ করে ফ্যান থিয়েট শহরে চলে যান। সেখানে এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন। এদিকে হো চি মিনের বাবাকে পৌলো কন্দর কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হলো। তারপর তিনি হো চি মিনকে প্যারিস পাঠানোর চিন্তা করলেন। কিন্তু এ জন্য কারিগরি বিদ্যালয়ে পড়তে হবে তিন বছর। হো চি মিন তিন বছর সময় নষ্ট না করে একটি চাকরি জোগাড় করে ফেললেন। তারপর তিনি যাত্রা শুরু করলেন প্যারিসের পথে। প্যারিসে তিনি যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেন তা হলো নগরকেন্দ্রিক জীবনের পঙ্কিলতা। উন্নত বিশ্বের নেতারা যখন ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে ব্যস্ত। তখন তিনি বজ ঘাতের মতো উত্থাপন করলেন আটদফা দাবি সংবলিত এক প্রস্তাব। ভিয়েতনামী জনগণের পক্ষ থেকে ‘জাতিসমূহের অধিকার’ শিরোনামে এই প্রস্তাব উত্থাপন করা হলো। তখন সবার প্রশ্ন ছিল কে এই প্রস্তাব উত্থাপনকারী যুবক? নওয়েন আই কুয়োক অর্থাৎ দেশপ্রেমিক নওয়েন। তারপর শুরু হলো হো চি মিনের ছদ্মনাম গ্রহণের পালা। এই প্রস্তাবই হলো সাম্রাজ্যবাদী দস্যুদের বিরুদ্ধে তার প্রথম আঘাত। ভিয়েতনামের উপর কর্তৃত্বকারী ফ্রান্সের বুকে বসে ফরাসি উপনিবেশবাদবিরোধী তার পিতৃ-মার্তৃভূমির মুক্তির সনদ দাখিল করলেন হো চি মিন। এ মহান নেতা ১৯৬৯ সালের ২ সেপ্টম্বর ৭৯ বয়সে মারা যান। কিন্তু তার জীবনকালে নিজ দেশের পরিপূর্ণ স্বাধীনতা দেখে যেতে পারেননি।

No comments:

Post a Comment