Chapter – 0 (Part - 1)
Introduction
[রাইটিং এর তত্ত্ব ও পদ্ধতিমালা সম্পর্কে নিজের মধ্যে একটি সার্বিক দার্শনিক পটভূমি তৈরি করতে হলে এই লেখাটি বিভিন্ন সময়ে ভাগ করে অন্তত ৩ বার পড়ুন।]
আমরা রাইটিং এর এপ্রোচ ও কলাকৌশল নিয়ে আলোচনার আগে কিছু প্রাথমিক আলোচনা করে নিব, যা সবার জন্য অবশ্যপাঠ্য। এই আলোচনা আমাদের চোখ খুলে দেয়ার জন্য। প্রথমেই রাইটিং সম্পর্কিত যে ভুল ধারণাগুলি প্রচলিত আছে সেগুলির ওপর আলোকপাত করা যাক।
রাইটিং স্কিল সম্পর্কিত কিছু ভুল ধারণাঃ
১। অনেকেই ভেবে বসে যে বাক্য গঠন করতে পারলেই রাইটিং এ ভালো করা যায়। এটি একটি ব্যাপক ও বড় ধরনের ভুল ধারণা। বাক্য গঠন করতে না জানলে এবং সঠিক ভাবটি প্রকাশের জন্য সঠিক শব্দটি ব্যবহার করতে না জানলে যে কোনোভাবেই কারো দ্বারা কিছুই লেখা সম্ভব নয়, এ তো স্বাভাবিক সত্য কথা, যা প্রমাণের ও প্রয়োজন নেই। কিন্তু তাঁর মানে আবার এই নয় যে, শুধু গ্রামারের নিয়ম অনুযায়ী সঠিক বাক্য গঠন করতে পারলেই রাইটিং এ ভালো করা যায়। বিষয়টি আদৌ তা নয়। রবীঠাকুর যে বাক্যগুলি গঠন করেছেন সেগুলিকে আলাদা বাক্য হিসেবে বিবেচনা করলে অধিকাংশ উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তি ই বাক্যগুলিকে আবার ও নতুন করে গঠন করতে পারবেন – দেখে দেখে – এবং বাক্যগুলি বুঝতেও তাদের কোনো সমস্যা হবে না। কিন্তু তিনি যে ক্ষেত্রে যা ভেবেছেন সেক্ষেত্রে তা না ভাবতে পারলে তাঁর বাক্যগুলি বা অনুরূপ এক গুচ্ছ বাক্য কারো মনের পটেই ভেসে উঠবে না। রাস্তার পাশে এক ব্যক্তি চা বিক্রি করছেন। তিনি স্বল্প-শিক্ষিত বা অশিক্ষিত হলেও তাঁর মাতৃভাষা তাঁর স্তর অনুযায়ী তিনি ভালোই জানেন। বেশ। ইংরেজিতে নয়, বাংলাতেই তাকে পৃথিবীর সবচেয়ে সহজ রচনা টি – অর্থাৎ ‘গরু’র রচনা – লিখতে বা বলতে বলুন তো। তিনি কি তা পারবেন? না। অর্থাৎ রাইটিং শুধু ভাষার ব্যাপার নয়।
মনে রাখতে হবে যে, উদাহরণস্বরূপ, আমরা যখন একটি অনুচ্ছেদ বা প্যারাগ্রাফ লিখি তখন কতকগুলি বাক্যের মাধ্যমে তা প্রকাশ করি বটে, তবে তাঁর অর্থ এই নয় যে আমরা সেক্ষেত্রে শুধু ঐ বাক্যগুলি ই লিখি; বরং আমরা সেক্ষেত্রে একটি প্যারাগ্রাফ ই লিখি। তেমনি আমরা যখন একটি প্রবন্ধ লিখি তখন একটি প্রবন্ধই লিখি, শুধু কতকগুলি বাক্য লিখি না। লেখার সময়ে আমরা বাক্য গঠন করি বটে, এবং সেই বাক্যগুলি গঠিত হয়ও বটে গ্রামারের নিয়ম অনুযায়ী, তবে মনে রাখতে হবে যে গ্রামার থেকে বাক্যগুলি আসে না, বরং সেগুলি আসে রাইটিং সম্পর্কিত অন্য কিছু পরিকল্পনা থেকে।
২। সচরাচর অনেকেই ভেবে বসে যে শুধু তথ্য প্রকাশ করলেই ভালো রাটিং হয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই ভুল ধারণাটি মহামারীর মত ছড়িয়ে আছে। অনেকে এমন আছে যারা বেশ ভালোই বাক্য গঠন করতে শিখে ফেলেছে এবং একটি নির্ভুল টেক্সট ও লিখে ফেলতে পারে কিন্তু তাদের চিন্তা বাক্যের সীমানা পার হয়ে যেতে পারে না বলে সেই লেখা আর এফেকটিভ বা কার্যকরী হয়ে ওঠে না – আকর্ষণীয় হয় না। রাটিং মাত্রই তথ্যের প্রকাশ। তবে তাঁর মানে এই নয় যে বিষয়বস্তুর তথ্যই একমাত্র তথ্য। তথ্য আর বক্তব্য এক নয়। টেক্সট আর কনটেক্সট এক নয়। বাক্য আর উপস্থাপন এক নয়। শুধু বাক্য গঠন করতে শিখলেই এই যাবতীয় বিষয় একত্র করে একটি বিশেষ উদ্দেশ্য সফল করার জন্য একটি টেক্সট নির্মাণ করা যায় না।
৩। অধিকাংশ ক্ষেত্রে যারা প্রথম লেখালেখি শিখছে তাদের মনে এমন ধারণা গড়ে ওঠে যে, লিখিত একটি টেক্সট কে সময় ও সুযোগ পেলে আরো অনেক লম্বা করা যেত, আরো অনেক কিছু সেখানে বলা যেত। ধারণাটি সামান্য পরিমাণে সঠিক কিন্তু অধিকাংশ পরিমাণেই বেঠিক। আপনি যা লিখলেন, তা যদি আরো দক্ষতা ও জ্ঞান অর্জন করার পর, উদাহরণ স্বরূপ দুই বছর পর, তা আবার ও লেখেন, তাহলে তাতে আপনার জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি পাবার কারণে সামান্য কিছু তথ্যের পরিবর্তন হতে পারে, তবে লেখার গাঁথুনিতে খুব বেশি পরিবর্তন হবে না। অর্থাৎ আপনি যদি রাইটিং এ দক্ষতা অর্জনের পর টেক্সট টি লেখেন তাহলে আরো দুই বছর কেন, পাঁচ বছর পরেও সেই লেখাটিকে আর কাঁচা হাতের লেখা বলে মনে হবে না। কোনো লেখকের সুন্দর ও সফল লেখার গুরুত্ব কখনোই নষ্ট হয় না। তা যদি হত তাহলে পরিণত বয়সে পৌঁছে সব লেখক ই তাদের আগের জীবনের লেখাগুলিকে নিজেই হেসে উড়িয়ে দিতেন।
এই আলোচনা থেকে কী বোঝা যাচ্ছে? বোঝা যাচ্ছে যে, লেখক উচ্চশিক্ষিত বা স্বল্পশিক্ষিত (আনুষ্ঠানিক শিক্ষার বিচারে) বা স্বশিক্ষিত যাই হোন না কেন, লেখার কলাটি (অবশ্য ব্যক্তিগতভাবে আমি লেখালেখির বিদ্যাকে কোনো আর্ট বা কলা বলি না, বরং বিজ্ঞান বা সায়েন্স ই বলি) একবার নিজের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলতে পারলে তিনি দেখতে পান যে, প্রতি মুহূর্তের লেখক হিসেবেই তিনি সফল লেখক।
এই আলোচনা থেকে আমরা যা জানলাম তাকে একটু ঘুরিয়ে বললে এরূপ বলা যায় – রাইটিং এমন একটি আর্ট যা ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তি রপ্ত করলে তাদের মধ্য দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন স্টাইল বা রীতি হিসেবে প্রকাশ পায় ও প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। এবং প্রতিটি স্টাইল ই নিজ গুণে এমন পূর্ণাংগতা ও পরিপক্কতার স্তরে চলে যায় যে সেই স্টাইলের মধ্যে আর অপূর্ণাংগতা খোজার প্রয়োজন হয় না।
৪। অনেকে মনে করে যে একটি লেখা শুরু করার পর তা যে-কোনো ভাবেই শেষ করা যায়। এই বিশ্বাসটি স্পষ্টভাবে না হলেও লেখকের মনে প্রচ্ছন্নভাবে কাজ করে। অদক্ষ লেখক ভেবেও বসতে পারে যে যা খুশি লিখলেই লেখা হয়ে যায় – যদি বাক্যগুলো সুন্দর হয়। - আসলে তাই যদি হতো তাহলে লেখকের দক্ষতার ই প্রয়োজন হত না, বরং তাঁর ইচ্ছা-অনিচ্ছা দিয়েই লেখালেখির কাজ চলত। এবং তখন লেখালেখির বিদ্যাটিকে আর আর্টের মর্যাদা দেয়ার প্রয়োজন হতো না।
বরং সত্য হলো, একটি লেখা যদি সুন্দরভাবে এগোতে থাকে, তাহলে তা যত এগোতে থাকে, তত তাঁর গতি প্রাকৃতিক হয়ে যেতে থাকে, এবং নিজ পূর্ণাজ্ঞতা গুণেই সমাপ্তির দিকে যেতে থাকে, লেখকের ইচ্ছা-অনিচ্ছার দ্বারা নয়। ভালো লেখার এই বৈশিষ্ট্যই লেখাটিকে ব্যক্তি থেকে বিচ্ছিন্ন, নিজ-গুণে সিদ্ধ শিল্পে রূপান্তরিত করে। এরূপ লেখার ক্ষেত্রে বিষয়টি এমন হয়ে ওঠে যে, যেন কলম নিজেই লিখছে, কারণ কলমের গতি হয়ে যায় একটি জটিল ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার সম্মিলিত প্রবাহের ফল, যার সাথে লেখকের দক্ষতা জড়িত, স্বেচ্ছাচারিতা নয়। সব বড় মাপের লেখক ই এক পর্যায়ে গিয়ে এমন টি মন্তব্য করেছেন যে তারা লেখেন না, কলম নিজেই লেখে, অর্থাৎ তাদেরকে দিয়ে লেখানো হয়। বলা বাহুল্য, কথাগুলি খুব উঁচু মানের এবং সাহিত্য-নির্ভর শোনালেও একাডেমিক থেকে শুরু করে ক্রিয়েটিভ লেখালেখি সব পর্যায়ের ক্ষেত্রেই এক ই দৃষ্টিভঙ্গি কার্যকর, যদি সত্যিকার অর্থে সেরা মানের লেখাই লিখতে হয়।
৫। সচরাচর মনে করা হয় যে লেখালেখি খুব কঠিন কাজ। অবশ্যই লেখালেখি শেখা এবং তাঁর চর্চা চালিয়ে যাওয়া জগতের সবচেয়ে কঠিন কাজ কারণ মানব সভ্যতা গড়েই ওঠে এভাবে। তবে এও মনে রাখতে হবে যে একটি সফল রচনা লেখককে যে আনন্দ দেয় তা সেই কাঠিন্যের চেয়ে বহুগুণ বেশি। লেখা সুন্দর ও সফল হয়ে উঠলে লেখক নিজেই তা বুঝতে পারেন।
৬। রাইটিং এর ক্ষেত্রে মহামারির মতো আর একটি ভুল ধারণা প্রচলিত আছে। তা হলো – লেখাকে সুন্দর বা আরো সফল করে তুলতে হলে আমাকে আরো বেশি ইংরেজিতে দক্ষ হতে হবে। ভুল। বরং উল্টো টিও ঘটতে পারে। সব ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে খুব ভালো ইংরেজি জানা ব্যক্তি যদি লেখালেখির দর্শন না জানেন তাহলে তাঁর লেখা অকারণে জটিল ও শব্দবহুল হয়ে যায়। তাতে শুধু থাকে কিছু বাক্য। কোনো আকর্ষণীয় উপস্থাপন তাঁর মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায় না।
এই ধারণাটি শুধু শিক্ষার্থী নয়, শিক্ষকগণের মধ্যেও প্রবলভাবে প্রচলিত। আর তাই তো আমরা রাইটিং শেখাতে গিয়ে ইংরেজি গ্রামার ও বাক্য গঠনের চর্চাটাও সাথে নিয়ে এগোতে চাই। আমাদের কারিকুলাম, সিলেবাস ও ম্যাটেরিয়াল সেই স্বাক্ষ্যই বহন করে। আসলে শেখার কোনো শেষ নেই। সবাইকেই সর্বদা শিখতে থাকতে হবে। কিন্তু তাঁর মানে এই নয় যে কাউকে ইংরেজি গ্রামার ও বাক্য গঠন শেখাতে শেখাতে একটি পর্যায় পার করে তাঁর পর তাকে রাইটিং শেখাতে শুরু করতে হবে। অন্তত জে. এস. সি. পর্যায় পর্যন্ত যে পৌঁছাতে পেরেছে তাকে অবশ্যই রাইটিং এর কলা কৌশল অনেক খানি ই শেখানো যায়। এবং সত্য কথা হলো, যে যেটুকু ইংরেজি শিখে ফেলেছে সেটুকুর ওপর ভিত্তি করেই তাকে রাইটিং এর কৌশল শিখিয়ে দেয়া যায়, যার ফলে ইংরজিতে নতুন কোনো দক্ষতা অর্জন না করেই সে আগের চেয়ে রাইটিং এ কমপক্ষে ১০ গুণ ভালো করবে। সে যেটুকু ইংরেজি শিখতে পেরেছে, তাঁর ওপর নির্ভর করেই স্বাধীনভাবে রাইটিং করে যেতে থাকবে। তা যদি সম্ভব না হয় তাহলে রাইটিং এর কলাকৌশলকে একটি স্বতন্ত্র বিদ্যা বলে আর লাভ কী? (চলবে … )
Coming soon … The Art of Writing
[প্রিয়োজনের কল্যাণে এই লেখাটি শেয়ার করুন।]
No comments:
Post a Comment