আপনি কি বলতে পারবেন পৃথিবীর প্রথম ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত বই কোনটি? এটা আর কোন বই নয়। খ্রিষ্টানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ বাইবেল। ৩৮০ খ্রিষ্টাব্দে প্রনীত ল্যাটিন সংস্করনটি প্রথম ছাপা হয় ছাপাখানায়। জার্মানীর মেইঞ্জ শহরের জোহানেস গুটেনবার্গ ১৪৫২-১৪৫৫ সালের মধ্যে গ্রন্থটি ছাপেন। যদিও জার্মান বিবলিওগ্রাফার’রা দাবী করেন যে গুটেনবার্গের এই মূদ্রণের পুর্ণতা পায় জোহান ফস্ট এবং পিটার স্কফার এর হাতে। জোহান ফস্ট ছিলেন একজন ধনী ব্যবসায়ী যিনি গুটেনবার্গের ব্যবসার আইনি অংশীদারিত্ব লাভ করেন এবং পিটার ছিলেন গুটেনবার্গের সহকারী।
১৭৬০ সালে কার্ডিনাল জুলস মাজারিন ফরাসি এক স্টেটসম্যানের বইয়ের ভিতরে প্রথম ছাপা হওয়া বাইবেলের একটি কপি খুঁজে পান। বলা হয়ে থাকে প্রথম ছাপা হওয়ার পর থেকে এই পর্যন্ত বাইবেল ১৮০৮ টি ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে। পৃথিবীর সব থেকে পুরাতন ছাপার অক্ষরে মুদ্রিত এই বাইবেলকে তাই প্রকাশকের নামানুসারে গুটেনবার্গ বাইবেল বলা হয়ে থাকে। উক্ত বাইবেলকে ৪২ লাইন বাইবেলও বলা হয়ে থাকে। কারণ কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া প্রতিটি ছাপা পাতায় ৪২ টি করে লাইন ছিলো। প্যারিসে মাজারিন এটা ১৭৬০ সালে প্রথম খুঁজে পান এজন্য অনেকে এই বাইবেলকে মাজারিন বাইবেল নামে অভিহিত করেন।
১৪৪০ সালে জার্মান বিজ্ঞানী জোহানেস গুটেনবার্গ একটি ছাপাখানা আবিষ্কার করেন। বিংশ শতাব্দী পর্যন্ত গুটেনবার্গের তৈরীকৃত ছাপাখানার মূলনীতি অনুসরণ করা হয়েছে সকল ধরনের ছাপাখানায়। গুটেনবার্গ প্রথমে বাইবেল মুদ্রণ করেন। প্রথম মুদ্রণে ১৮০ কপি বাইবেল ছাপা হয়। বাইবেলটি লাতিন ভাষায় ছাপা হয়। পৃষ্টাগুলো ছাপানোর পর রঙচঙে সূচনা এবং ইল্যুমিনেশান হাতে আঁকা হয়। আধুনিক পাঠকের কাছে গুটেনবার্গের প্রকাশিত বাইবেলের অনেক খুত ধরা পড়বে। পেজিনেশান, ওয়ার্ড স্পেসিং, ইন্ডেনটেশান এবং প্যারাগ্রাফ ব্রেকের মত দৃষ্টিকটু বিষয়গুলোর উপস্থিতি চোখে পড়ার মত। ১২৮০ পৃষ্ঠার বাইবেলে লেখাগুলো দুই কলামে সাজানো ছিলো। কালো অক্ষরে জার্মান গথিক লিপিতে ছাপা হয়। শিরোনাম ছিলো লাল ও নীল কালির।
বিজ্ঞান এগিয়ে গেছে। আমরা না চাইতেও অনেক কিছু শিখে ফেলছি প্রতিনিয়ত। শেখার কোন বিকল্প নেই। শিখতে হলে বই পড়তে হবে। তাই বই পড়ুন।
No comments:
Post a Comment