কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মোবাইল সব কিছুতেই এখন কিবোর্ড আছে। লেখালেখির কারণে আমরা এখন QWERTY কিবোর্ড শব্দটার সাথে পরিচিত। অধিকাংশ মোবাইলে এখন QWERTY কিপ্যাড ব্যবহার করা হচ্ছে। আমরা মোটামুটি ভাবে এটুকু বুঝি, যে সকল কি প্যাডে বা বোর্ডে ইংরেজী সবকটি হরফ বা অক্ষরের জন্য আলাদা বোতাম বা বাটন থাকে তাকে QWERTY কি প্যাড/বোর্ড বলে। কিন্তু কেন এটাকে QWERTY কিবোর্ড বলা হয়। আপনার কিবোর্ডের দিকে লক্ষ করুন। ইংরেজী ২৬ টি লেটারকে সাজানো হয়েছে তিন সারিতে। প্রথম সারির প্রথম ছয়টি অক্ষর যথাক্রমে Q, W, E, R, T এবং Y । আর এই ছয়টি অক্ষর মিলিয়ে এটার নামকরন করা হয়েছে QWERTY কিবোর্ড। সরকারী অফিস আদালতে গেলে দেখা যায় খটাখট শব্দে টাইপ করা হচ্ছে। ১৮৬৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিষ্টোফার ল্যাথাম শোলস প্রথম টাইপরাইটার আবিষ্কার করেন। তার যন্ত্রে একটি লিভার লাগানো ছিলো যেটার দারা প্রতি লাইন লেখার পর কাগজকে সরানো যেত। ল্যাথামের কি বোর্ডে ইংরেজী অক্ষরগুলোকে আলফাবেটিক্যাল অর্ডার মানে a, b, c, d, e ক্রমে সাজানো ছিলো। যখন টাইপিষ্টগণ এই "ABC" কিবোর্ডে দ্রুত টাইপ করতে যেত তখন ‘কি’ গুলোতে জট লেগে যেত। কিভাবে এই জট লাগা ছাড়ানো যায় সেটা ল্যাথাম আবিষ্কার করতে পারলেন না। অনেক ভাবনা চিন্তার পরে তিনি সমাধানে এলেন দ্রুত টাইপ করার বদলে আস্তে টাইপ করা চালিয়ে যাওয়া ভালো। অনেকটা নেই মামার থেকে কানা মামা ভালোর মত। কারণ টাইপরাইটার আবিষ্কারের আগে মানুষকে ব্যক্তিগত লেখালেখি সব হাতেই করতে হত। ল্যাথাম ১৮১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারী পেনিনসিলভানিয়ার মুরসবাগে জন্মগ্রহন করেন এবং ১৮৯০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারী উইনকনসিনের মিলাওকি নগরে মৃত্যুবরণ করেন। ল্যাথাম শব্দের গঠনের উপর বিস্তর গবেষণা করলেন। কোন শব্দ থেকে কোন শব্দের দুরত্ব কতটুকু তা নির্ণয় করার চেষ্টা চালালেন। ১৮৭৫ সালে ল্যাথা আমোস ডেনসমোরের সহায়তায় কি বোর্ডের অক্ষরগুলোকে নতুন করে সাজালেন। আগের সমস্যা পুরোপুরি দূর না হলেও অনেকটা কমে গেলো। নতুন “কি” সজ্জাসংবলিত এই কিবোর্ডকে ডাকা হত QWERT কি বোর্ড নামে। টাইপিষ্ট’রা কীবোর্ডের এই পাগলাটে সজ্জায় প্রথমে খুব বিরক্ত বোধ করলো। একসময় তারা এই বিন্যাস মুখস্ত করে ফেলতে সমর্থ হলো। তখন টাইপের গতি দেখে কে! ঝড়ের বেগে টাইপ হতে থাকলো। কোথাও কোথাও মিনিটে কে কতটি অক্ষর টাইপ করতে পারে তার প্রতিযোগিতাও হতে লাগলো। নতুন এই কি বোর্ডের গুরুত্ব অনুধাবন করে ল্যাথাম তার টাইপরাইটারের প্যাটেন্টের সাথে যোগ করার আবেদন জানালেন। কম্পিউটার আবিষ্কারের ফলে টাইপরাইটারের ব্যবহার এখন খুব কমে গেছে। কিন্তু কম্পিউটার মোবাইলের কি বোর্ডে এখনো ল্যাথাম টিকে আছে QWERTY’র বিন্যাসে। ল্যাথামের জন্য রইলো একটি বৈজ্ঞানিক সালাম। হুমায়ুন আহমেদ নিশ্চয়ই বৈজ্ঞানিক সালামের একটা ব্যাখ্যা দাঁড় করাতে পারতেন।
abiskarer_pechone_mojar_golpo #আবিষ্কারের পেছনের মজার গল্প #আবিষ্কারের ঘটনা #রহস্য গল্প #abiskarer pesone mojar golpo #abiskarer ghotona #rohosso golpo
No comments:
Post a Comment