মানুষই একমাত্র প্রাণী যে কেবলমাত্র প্রাণেরই অধিকারী নয়, একই সঙ্গে মেধা, মনন ও বুদ্ধিমত্তারও অধিকারী। গোটা প্রাণীকূলে মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের প্রধান কারণ তার বুদ্ধিমত্তা। সৃষ্টির সূচনা লগ্নে মানুষ প্রতিকূল প্রকৃতি ও বন্য জীবজন্তুর আক্রমণের কাছে অসহায় ছিল। আদিম অসহায় মানুষ জ্ঞান ও বুদ্ধির চর্চার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত সভ্যতার নতুন নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে যাচ্ছে। কেননা সে জানে, জ্ঞান ও বুদ্ধির চর্চার জোরেই মানুষ আজ সভ্যতার শীর্ষে অবস্থান করছে। এটিই মানুষের সব থেকে বড় শক্তি। আপাতদৃষ্টিতে, শারীরিক শক্তির ক্ষমতা বেশী মনে হলেও বস্তুত, কৌসলি ও বুদ্ধিমান মানুষই অধিক শক্তিশালী। শারীরিক শক্তি দ্বারা যা অর্জন করা যায় তা অত্যন্ত স্বল্প সময়ের জন্য স্থায়ী হয়। ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, হিটলারের মতো শাসকের শারীরিক ও অস্ত্র শক্তির বলে ক্ষমতা লাভ করলেও পৃথিবীর ইতিহাসে তারা বরণীয় হয়ে থাকতে পারেনি বরং ইতিহাসের কলঙ্কিত অধ্যায়ে তাদের নাম লেখা হয়েছে। স্বল্প সময়ের জন্য তারা গোটা পৃথিবীর শাসন ক্ষমতা নিজ হাতে নিলেও, পরবর্তীতে তারা নিন্দিত হয়েছে। তাদের অপশাসন বেশিদিন টিকে থাকতে পারেনি। অন্যদিকে, যুগে যুগে যারা লড়াইয়ের পথ পরিহার করে, জ্ঞান ও বুদ্ধির চর্চা দ্বারা মানবকল্যাণে অবদান রেখেছেন, ইতিহাসে তাদের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা হয়েছে। শারীরিক শক্তি প্রয়োগে সমাজে, দেশে সর্বোপরি গোটা পৃথিবীতে দাঙ্গা-হাঙ্গামা, বিশৃঙ্খলা-অশান্তি লেগেই থাকে। কিন্তু বুদ্ধিমান ব্যক্তি বিশৃঙ্খলতার পথ পরিহার করে বুদ্ধির জোরে সকল সমস্যার সহজ ও শান্তিপূর্ণ সমাধান করতে পারে। জগতের সকল প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে মানুষের সব থেকে বড় অস্ত্র জ্ঞান ও বুদ্ধিমত্তা।
শিক্ষা: পরম স্রষ্টা একমাত্র মানুষকেই জ্ঞান ও বুদ্ধির সমন্বয়ে সৃষ্টি করেছেন। নিজ নিজ বুদ্ধিমত্তা দ্বারা পৃথিবীর কল্যাণ সাধনের জন্য স্রষ্টা মানুষকে জ্ঞান-বুদ্ধি দিয়েছেন। প্রত্যেকের উচিত নিজ বুদ্ধিমত্তাকে সৎপথে ব্যবহার করে মানবকল্যাণ সাধনে সচেষ্ট হওয়া।
No comments:
Post a Comment