eBongBD.com

"All about things for easy life"
This is a website about solution of our daily problems. You can get here all Problem's solution.

Breaking

পড়ার টেবিলে বসার পূর্বে ১০ মিনিট হাঁটলে বা হালকা ব্যায়াম করলে মস্তিষ্কের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এতে পড়া মনে রাখতে বেশ সুবিধা হয়।

Tuesday, August 20, 2019

টার্কি মুরগি পালন পদ্ধতি 

টার্কি কি ?

মেলিয়াগ্রিডিডেই পরিবারের এক ধরণের বৃহদাকৃতির পাখিবিশেষ। এগুলো দেখতে মুরগির বাচ্চার মতো হলেও তুলনামূলকভাবে অনেক বড়। এক প্রজাতির বুনো টার্কি মেলিয়াগ্রিস গ্যালোপাভো উত্তর আমেরিকা ও মধ্য আমেরিকার বনাঞ্চলে বসবাস করে। গৃহপালিত টার্কি এই প্রজাতি থেকে ভিন্নতর। অন্য জীবিত প্রজাতির মধ্যে মেলিয়াগ্রিস ওসেলাটা বা চক্ষু আকৃতির চিহ্নবিশিষ্ট টার্কি আবাসস্থল হচ্ছে ইউকাতান উপ-দ্বীপের বনাঞ্চলে। বিশ্বের সর্বত্র টার্কি গৃহপালিত পাখিরূপে লালন-পালন করা হয়।

কোথা হতে টার্কি আসল ?

যখন ইউরোপীয়রা প্রথমবারের মতো টার্কিকে আমেরিকায় দেখতে পেয়েছিল, তখন তারা ভুলবশতঃ ভাবল যে পাখিটি এক ধরণের গিনিয়া মুরগি (নুমিডা মেলিয়াগ্রিস)। পরবর্তীকালে তারা তুরস্ক দেশ থেকে মধ্য ইউরোপে পাখিটিকে নিয়ে আসে। গিনিয়া মুরগি বা গিনিয়া ফাউলকে টার্কি ফাউল নামেও ডাকা হয়। তাই, তুরস্ক দেশের নামানুসারে উত্তর আমেরিকার পাখিটির নামকরণ করা হয় টার্কি। ১৫৫০ সালে ইংরেজ নাবিক উইলিয়ামাম স্ট্রিকল্যান্ড টার্কি পাখিকে সর্বপ্রথম ইংল্যান্ডে নিয়ে আসেন।

পৃথিবীর কোন কোন দেশে টার্কি পাওয়া যায় ?

এটি সর্বপ্রথম গৃহে পালন শুরু হয় উত্তর আমেরিকায় । কিন্তু বর্তমানে ইউরোপ সহ পৃথিবীর প্রায় সব দেশে এই পাখী কম- বেশি পালন করা হয় । বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টার্কি পাখির মাংস বেশ জনপ্রিয়। টার্কি বর্তমানে মাংসের প্রোটিনের চাহিদা মিটিয়ে অর্থনীতিতে অবদান রাখছে । এর মাংসে প্রোটিন বেশি , চর্বি কম এবং আন্যান্য পাখীর মাংসের চেয়ে বেশি পুষ্টিকর। পশ্চিমা দেশসমূহে টার্কি ভীষণ জনপ্রিয় ।

তাই সবচেয়ে বেশি টার্কি পালন হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাজ্য, পোল্যান্ডে, ব্রাজিলে। তবে বাংলাদেশেও এখন ব্যাক্তি উদ্যোগে টার্কি চাষ শুরু হয়েছে। তৈরি হয়েছে ছোট-মাঝারি অনেক খামার। ইলেকট্রনিক মিডিয়া আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বদৌলতে বেকার যুবকদের অনেকেই টার্কি পালনে আহগ্রী হয়ে উঠেছেন। কিছু কিছু খামার থেকে টার্কির মাংস বিদেশে রপ্তানীর চেষ্টা চলছে। অচিরেই এ পাখির মাংস রপ্তানী অর্থনীতিতে অবদান রাখবে ধারণা করা হচ্ছে।

টার্কি পালনের সুবিধা

টার্কি পালনের সুবিধা সমুহ —

১। মাংস উদপাদন ক্ষমতা ব্যাপক ।

২। এটা ঝামেলাহীন ভাবে দেশী মুরগীর মত পালন করা যায় ।

৩। টার্কি ব্রয়লার মুরগীর চেয়ে দ্রুত বাড়ে।

৪। টার্কি পালনে তুলনা মূলক খরচ অনেক কম, কারন এরা দানাদার খাদ্যের পাশাপাশি ঘাস,লতা পাতা খেতেও পছন্দ করে।

৫। টার্কি দেখতে সুন্দর, তাই বাড়ির সোভা বর্ধন করে।

৬। টার্কির মাংসে প্রোটিনের পরিমাণ বেশী, চর্বিকম ।তাই গরু কিংবা খাসীর মাংসের বিকল্প হতে পারে।

৭। টার্কির মাংসে অধিক পরিমাণ জিংক, লৌহ, পটাশিয়াম, বি৬ও ফসফরাস থাকে। এ উপাদান গুলো মানব শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী। এবং নিয়মিত এই মাংস খেলে কোলেস্টেরল কমে যায়।

৮। টার্কির মাংসে এমাইনো এসিড ওট্রিপটোফেন অধিক পরিমাণে থাকায় এর মাংস খেলেশরীরেরোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

৯। টার্কির মাংসে ভিটামিন ই অধিকপরিমাণে থাকে।

১০। একটি আদর্শ টার্কি খামার করতে খুব বেশী পুঁজির প্রয়োজন হয়না।

১১। অন্যান্য পাখীর তুলনায় এর রোগ বালাই কম এবং কিছু নিয়ম মেনে চললে এই খামারে ঝুঁকি অনেক কম ।

১২। যেহেতু ৭৫% পর্যন্ত ঘাস দেয়া যায়, তাই খবারে খরচ কম।

১৩। বাজার চাহিদা প্রচুর।

১৪। উচ্চ মুল্য থাকায় খরচের তুলনায় আয় অনেক বেশী।


টার্কি মুরগি পালন পদ্ধতিঃ

দুইভাবে টার্কি পালন করা যায়-

০১. মুক্ত চারণ পালন পদ্ধতি ।

০২. নিবিড় পালন পদ্ধতি।


০১. মুক্ত চারণ পালন পদ্ধতিঃ

মুক্ত চারণ পদ্ধতিতে এক একর ঘেরা জমিতে ২০০-২৫০টি পূর্ণ বয়স্ক টার্কি পালন করা যায়। রাতে পাখিপ্রতি ৩-৪ বর্গফুট হারে জায়গা লাগে। চরে খাওয়ার সময় তাদের শিকারি জীবজন্তুর হাত থেকে বাঁচাতে হবে। ছায়া ও শীতল পরিবেশ জোগানর জন্য খামারে গাছ রোপণ করতে হবে। চারণভূমি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ব্যবহার করতে হবে এতে পরজীবীর সংক্রমণ কম হয়। সুবিধা : খাবারের খরচ ৫০ শতাংশ কম হয়; স্বল্প বিনিয়োগ : খরচের তুলনায় লাভের হার বেশি।




মুক্ত চারণ ব্যবস্থায় খাবার


টার্কি খুব ভালোভাবে আবর্জনা খুঁটে খায় বলে এরা কেঁচো, ছোট পোকামাকড়, শামুক, রান্নাঘরের বর্জ্য ও উঁইপোকা খেতে পারে, যাতে প্রচুর প্রোটিন আছে ও যা খাবারের খরচকে ৫০ শতাংশ কমিয়ে দেয়। এছাড়া শিম জাতীয় পশুখাদ্য যেমন লুসার্ন, ডেসম্যান্থাস, স্টাইলো এসব খাওয়ানো যায়। চরে বেড়ানো পাখিদের পায়ের দুর্বলতা ও খোঁড়া হওয়া আটকাতে খাবারে ঝিনুকের খোলা মিশিয়ে সপ্তাহে ২৫০ গ্রাম হিসাবে ক্যালসিয়াম দিতে হবে। খাবারের খরচ কম করার জন্য শাকসবজির বর্জ্য অংশ দিয়ে খাবারের ১০ শতাংশ পরিমাণ পূরণ করা যেতে পারে। 

স্বাস্থ্য রক্ষাঃ

মুক্তচারণ ব্যবস্থায় পালিত টার্কির অভ্যন্তরীণ (গোল কৃমি) ও বাহ্য (ফাউল মাইট) পরজীবী সংক্রমণের সম্ভাবনা অত্যন্ত বেশি থাকে। তাই পাখিদের ভালো বিকাশের জন্য মাসে একবার ডিওয়ার্মিং ও ডিপিং করা আবশ্যক।

নিবিড় পালন পদ্ধতিঃ

বাসস্থান টার্কিদের রোদ, বৃষ্টি, হাওয়া, শিকারি জীবজন্তু থেকে বাঁচায় ও আরাম জোগায়। অপেক্ষাকৃত গরম অঞ্চলগুলোতে খামার করলে ঘরগুলো লম্বালম্বি পূর্ব থেকে পশ্চিমে রাখতে হবে। খোলা ঘরের প্রস্থ ৯ মিটারের বেশি হওয়া চলবে না। মেঝে থেকে ছাদ পর্যন্ত ঘরের উচ্চতা ২.৬ থেকে ৩.৩ মিটারের মধ্যে থাকতে হবে। বৃষ্টির ছাঁট আটকাতে ঘরের চালা এক মিটার বাড়িয়ে রাখতে হবে। ঘরের মেঝে সস্তা, টেকসই, নিরাপদ ও আর্দ্রতারোধক বস্তু যেমন কংক্রিটের হওয়া বাঞ্ছনীয়। কম বয়সি এবং প্রাপ্ত বয়স্ক পাখির ঘরের মধ্যে অন্তত ৫০ থেকে ১০০ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং পাশাপাশি দুটি ঘরের মধ্যে অন্তত ২০ মিটার দূরত্ব থাকতে হবে। ডিপ লিটার পদ্ধতিতে টার্কি পালনের সাধারণ পরিচালনা ব্যবস্থা মুরগি পালনেরই মতো, তবে বড় আকারের পাখিটির জন্য যথাযথ বসবাস, ওয়াটারার ও ফিডারের জায়গার ব্যবস্থা রাখতে হবে।

সুবিধাঃ

ক। উন্নত উৎপাদন দক্ষতা,

খ। উন্নততর পরিচালন,

গ। ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ।

নিবিড় পালন ব্যবস্থায় “টার্কি মুরগির খাবারঃ"

নিবিড় পালন ব্যবস্থায় টার্কি মুরগিকে ম্যাশ ও পেলেট (ট্যাবলেট) দুইভাবেই খাবার দিতে হবে। মুরগির তুলনায় টার্কির শক্তি, প্রোটিন ও খনিজের প্রয়োজন বেশি। সেজন্য টার্কির খাবারে এগুলোর আধিক্য থাকতে হবে। খাবার মাটিতে না দিয়ে ফিডারে দিতে হবে। যেহেতু পুরুষ ও মাদির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় শক্তির (এনার্জি) পরিমাণ আলাদা, তাই ভালো ফল পাওয়ার জন্য তাদের পৃথকভাবে পালন করতে হবে। টার্কিদের সব সময় অবিরাম পরিষ্কার পানির প্রয়োজন। গ্রীষ্মকালে ওয়াটারারের সংখ্যা বাড়িয়ে দিতে হবে এবং আপেক্ষতৃক ঠাণ্ডা সময়ে খাবার দিতে হবে। পায়ের দুর্বলতা এড়াতে দিনে ৩০-৪০ গ্রাম হারে ঝিনুকের খোসার গুঁড়া দিতে হবে এবং খাবারে পরিবর্তন আনার প্রয়োজন হলে তা আস্তে আস্তে করতে হবে।

সবুজ খাদ্যঃ

নিবিড় পদ্ধতিতে ড্রাই ম্যাশ হিসাবে মোট খাদ্যের ৫০ শতাংশ পর্যন্ত সবুজ খাবার দেয়া যায়। সব বয়সের টার্কির জন্য টাটকা লুসার্ন প্রথম শ্রেণীর সবুজ খাদ্য। এছাড়া খাবারের খরচ কম করার জন্য ডেসম্যান্থাস ও স্টাইলো কুচি করে টার্কিদের খাওয়ান যেতে পারে।

      বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে টার্কি মুরগি পালন দিনে দিনে জনপ্রিয়তা অর্জন করছে। টার্কি বাণিজ্যিক মাংস উৎপাদনের জন্য খুবই উপযুক্ত কিন্তু বাণিজ্যিকভাবে ডিম উৎপাদনের জন্য উপযুক্ত নয়। তারা দেখতে খুব সুন্দর হয় এবং আপনার বাড়ির সৌন্দর্য বাড়াতে করতে সাহায্য করে। টার্কি মুরগি দ্রুত বড় হয়ে যায় এবং ব্রয়লার মুরগির মতো খাওয়ার উপযুক্ত হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের আবহাওয়া অন্যান্য পরিস্থিতিতে টার্কি মুরগি পালনের জন্য খুবই উপযুক্ত। এগুলোর পালন মুরগির মতো খুব সহজ।

বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে টার্কি পালন-ব্যবসা করে ভালো মুনাফা অর্জনের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। একটুখানি সচেতনতা, সরকারি গবেষণা এবং ক্রেতা-বিক্রেতার পারস্পরিক অংশগ্রহণে এ টার্কিই হয়ে উঠতে পারে আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যম এমনকি ব্যপক উৎপাদনের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের উপায়। 

টার্কি মুরগীর বাসস্থান তৈরী

বাসস্থান:

বাসস্থান টার্কিদের রোদ, বৃষ্টি , হাওয়া , শিকারী জীবজন্তু থেকে বাঁচায় ও আরাম জোগায়৷ দেশের অপেক্ষাকৃত গরম অঞ্চলগুলিতে ঘর গুলি লম্বালম্বি পূব থেকে পশ্চিমে রাখতে হবে ।

দুটি ঘরের মধ্যে অন্তত 20 মিটার দূরত্ব থাকতে হবে এবং কমবয়সী পাখীর ঘর প্রাপ্তবয়স্কদের ঘর থেকে অন্তত 50 থেকে 100 মিটার দূরে থাকতে হবে।

খোলা ঘরের প্রস্থ 9 মিটারের বেশি হওয়া চলবে না৷

মেঝে থেকে ছাদ পর্যন্ত ঘরের উচ্চতা 2.6 থেকে 3.3 মিটারের মধ্যে থাকতে পারে৷

বৃষ্টির ছাঁট আটকাতে ঘরের চালা এক মিটার বাড়িয়ে রাখতে হবে৷

ঘরের মেঝে সস্তা, টেঁকসই ও নিরাপদ ও আর্দ্রতা রোধক বস্তু , যেমন কংক্রিটের হওয়া বাঞ্ছনীয়

টার্কির জাত সমূহঃ

বিশ্বে অনেক প্রজাতির টার্কি রয়েছে । এদের জাত যেমন ভিন্ন তেমনি নামও ভিন্ন ভিন্ন । তবে তাঁর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল :

১. ব্রড ব্রেস্টেড ব্রোঞ্জ পালকের মূল রং কালো,তামাটে নয় । মাদী পাখির বুকের পালকের রং কালো ও ডগাগুলি সাদা হয় । যার দরুন মাত্র ১২ সপ্তাহ বয়সেই লিঙ্গ নির্ধারণ করা হয় ।

২.ব্রড ব্রেস্টেড হোয়াইট এটি ব্রড ব্রেস্টেড ব্রোঞ্জ ও হোয়াইট হল্যান্ডের সংকর যার পালকগুলি সাদা হয় । সাদা পালকের টার্কির গরম সহ্য করার ক্ষমতা বেশী ও সেই সঙ্গে পালক ছাড়ানোর পরে এদের পরিষ্কার ও ভালো দেখায় ।

৩.বেল্টসভিল স্মল হোয়াইট এটি রং ও আকারে ব্রড ব্রেস্টেড হোয়াইট প্রজাতির খুবই কাছাকাছি তবে আয়তনে ছোট । ভারী প্রজাতির তুলনায় এদের ডিম দেওয়া ,উর্বরতা ও ডিম ফোটার পরিমাণ বেশী হয় এবং ডিমে তা দেওয়ার ঝোঁক কম হয় ।

৪. নন্দনম টার্কি – প্রতিটি কালো দেশী প্রজাতি ও বিদেশী বেল্টসভিল স্মল হোয়াইট প্রজাতির শংকর ।

টার্কি মুরগীর বাচ্চা পালন পদ্ধতি

(১) বাচ্চার ঘরে ঠিকমতো তাপ দিতে হবে। যদি স্টোভে গরম করার ব্যবস্থা থাকে তবে দেখতে হবে স্টোভে বা ল্যাম্পে কোন গন্ডগোল আছে কিনা। কোন কারনেই যেন বাচ্চারা উত্তপ্ত আলোর কাছে না পৌছাতে পারে-সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

(২) ঘরে অবশ্যই স্যাতসেতে ভাব যেন না থাকে। এটা এড়ানো যাবে বাচ্চা ঘরে পুরুস্তরের বিছানা (Deep litter) বিছিয়ে।

(৩) বাচ্চারা যেন বিছানার বিচুলি (খড়) খাবার অভ্যাস না করে। বাচ্চাদের খাবার দিতে হবে বাচ্চারা ১ দিনের হলে শক্ত পিচবোর্ডের ওপর। কিছুটা বড় টার্কিদের জন্য খাবারের জায়গা (Chick hoppers)সবসময় যেন খাবারে ভর্তি থাকে। পরীক্ষিত এবং ব্রুডিংদের সুষম খাবার দিতে হবে।

(৪) টাটকা বাতাস আসবার ব্যবস্থা রাখতে হবে।

(৫) বাচ্চাদের বয়স ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ হলে ওদের দাড়ে বসানো অভ্যাস করতে হবে। বাচ্চাদের খুব তাড়াতাড়ি দাড়ে বসা অভ্যাস করালে মেঝেতে ভিড় কমবে। সেই সাথে বিছানা থেকে তৈরি রোগ ব্যাধির হাত থেকেও মুক্ত থাকবে ওরা।

(৬) বাচ্চাদের সামনে পরিষ্কার মোটামুটি ঠান্ডা পানি দিনে অন্তত দুই বার রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।

(৭) বাচ্চা তিন সপ্তাহের বেশি বয়স হয়ে গেলে ওদের কুচানে ঘাস দেবার ব্যবস্থা করুন।

(৮) প্রতিদিন বাচ্চা ঘর খাবার এবং পানির পাত্র সহ পরিষ্কার করতে হবে।

(৯) নিয়মিত বাচ্চাদের প্রয়োজনীয় টিকা দেবার ব্যবস্থা করতে হবে।

(১০) সবসময় বাচ্চ ঘর যেন বাচ্চাদের ভীড়ে ভরাট না থাকে। বীড় হলে বাচ্চা বাড়বে কম এবং মারাত্নক ব্যাধির সম্ভাবনা বাড়বে।

(১১) বাচ্চা ঘর এমন জায়গায় করতে হবে যেন ঠান্ডা বাসাত এবং বৃষ্টি বাচ্চাদের ব্যতিব্যস্ত করে না তোলো।

(১২) প্রতিদিন বাচ্চাদের পরিদর্শন করুন। দিনে যতবার বেশি পারেন তত ভাল। লক্ষ্য করতে হবে কোন অস্বভাবিকতা নজরে পড়ে কিনা। সবসময়ে পশু চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে।

(১৩) বাচ্চাদের ব্রুডিং ঘরে আনবার আগে একবার ঘরের আসবাব, তাপমান যন্ত্র, পানি এবং খাবারের জায়গাগুলি ভালভাবে পরীক্ষা করে নিতে হবে। কোন অসামঞ্জস্য বা ক্রুটি থাকলে সেটা অবশ্যই ঠিক করে নিতে হবে।

(১৪) ঠোকরান ও মারামারি থেকে মাথায় আঘাত লাগা আটকাতে স্নুড বা ডিউবিল(ঠোঁটের গোড়ায় মাংসল পিণ্ড) সরিয়ে ফেলা হয়৷ এক দিন বয়সে আঙুলের চাপ দিয়ে স্নুডতুলে ফেলা যায়৷ ৩ সপ্তাহ বয়সে তা ধারাল কাঁচি দিয়ে মাথার একেবারে কাছাকাছি কেটে ফেলা যায়৷

(১৫) টার্কি বাচ্চা ফুটার পর নাভি শুকানোর জন্য” কসোমিক্সপ্লাস” ৩দিন পানির সাথে। মৃত্যুহার কম হবে এবং ভালো কার্যকারি।

টার্কি মুরগি পালন পদ্ধতিতে বিবেচ্চ্য বিষয়ে

টার্কি মুরগীর আদর্শ খাবার এবং নিয়ম

সবুজ খাবারঃ

সব সময় মোট খাবারের সঙ্গে ৫০% সবুজ ঘাস খেতে দিলে ভালো । সে ক্ষেত্রে নরম জাতীয় যে কোন ঘাস হতে হবে । যেমন – কলমি, হেলেঞ্চা ইত্যাদি । একটি পূর্ণ বয়স্ক টার্কির দিনে ১৪০ – ১৫০ গ্রাম খাবার দরকার হয় । যেখানে ৪৪০০ – ৪৫০০ ক্যালোরি নিশ্চিত করতে হবে ।

খাবারঃ

টার্কির খাবার সরবরাহের জন্য দুইটি পদ্ধতি ব্যাবহার করা যায় । যেমন ম্যাশ ফিডিং ও পিলেট ফিডিং । একটি আদর্শ খাদ্য তালিকা নিচে দেয়া হলো –

         ধান ————— ২০%

গম —————- ২০%

ভুট্টা ————– ২৫%

সয়াবিন মিল ——-১০%

ঘাসের বীজ ——–০৮%

সূর্যমুখী বীজ ——-১০%

ঝিনুক গুড়া ——–০৭%

মোট======== ১০০%


 সতর্কতাঃ

অন্যান্য পাখির তুলনায় টার্কির জন্য বেশী ভিটামিন, প্রোটিন, আমিষ, মিনারেলস দিতে হয় । কোন ভাবেই মাটিতে খাবার সরবরাহ করা যাবে না । সব সময় পরিষ্কার পানি দিতে হবে ।

টার্কির খাবার দেওয়ার পদ্ধতিগুলিঃ


1. মুরগীর তুলনায় টার্কির শক্তি, প্রোটিন ও খনিজের প্রয়োজন বেশি ৷

2. যেহেতু পুরুষ ও মাদীর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় শক্তির(এনার্জি) পরিমাণ আলাদা, তাই ভাল ফল পাওয়ার জন্য তাদের পৃথক ভাবে পালন করতে হবে ৷

3. খাবার ফীডারে দিতে হবে, মাটিতে নয় ৷

4. যখনই এক রকম খাবার থেকে অন্য খাবারে পরিবর্তন করা হবে তা যেন আস্তে আস্তে করা হয় ৷

5. টার্কিদের সব সময় অবিরাম পরিষ্কার জলের জোগান দরকার হয় ৷

6. গ্রীষ্মকালে আরও বেশী সংখ্যায় ওয়াটারার রাখুন ৷

7. গ্রীষ্মকালে দিনের অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ডা সময়ে টার্কিদের খাবার দিন ৷

8. পায়ের দুর্বলতা এড়াতে দিনে 30-40 গ্রা. হারে ঝিনুকের খোলার গুঁড়ো দিন ৷

টার্কি মুরগীর সংক্রামক রোগপ্রতিকারঃ

টার্কির ফাউল পক্স একটি উচ্চ মাত্রার সংক্রামক রোগ যা পক্স ভাইরাসের সংক্রমনে হয়ে থাকে।সাধারণত টার্কির শরীরের পালক বিহীন জায়গায় সাধারণত শক্ত গোটা উঠে এবং চোখ দিয়ে পানি পড়ে।

পক্স সচরাচর দুই রকমের হয়:-

১। শুকনা পক্স

২। ভিজা পক্স।

সংক্রমনের কারণ এবং স্থানান্থরঃ

শুষ্ক পক্স একটি ভাইরাস জনিত রোগ যা টার্কির পালকবিহীন অংশে হয়,সাধারণত ঝুটি এং চোখের পাতায় এটি হয়।

ভেজা পক্স টার্কির শ্বাসতন্ত্র, চোখ, মুখ এবং মুখ:গহ্বরে হয়, এটি প্রাণঘাতী।

মুরগীতে পক্সের সংক্রমণ সাধারণত পোকার কামড়ের মাধ্যমে হয় (যেমন:- মশা)। 

আক্রান্ত টার্কির পালক, পালকের অংশবিশেষ, চামড়ার অংশ, লালা এবং রক্তের মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়।

পক্স উচ্চ মাত্রার সংক্রামক রোগ এবং আস্তে আস্তে ফ্লকের মধ্যে ছড়াতে থাকে। এটি সুপ্তাবস্থায় ফ্

লকের মধ্যে সপ্তাহ, মাস এমনকি এক বছর পর্যন্ত থাকতে পারে। সংবেদনশীল মুরগী সাধারনত নাক এবং মুখ দিয়ে অক্রান্ত হয়।

লক্ষণঃ

শুষ্ক পক্সে প্রাথমিক অবস্থায় ঝুটি এং চোখের পাতায় ছাই রংয়ের হালকা উচু ফোস্কার মত গুটি উঠে । এই ফোস্কাগুলো আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে, বড় হয়ে হলুদ রং ধারণ করে এবং চুড়ান্ত অবস্থায় কালো আচিলের মত হয়ে যায়।

ভেজা পক্সে টার্কির শ্বাসতন্ত্র, চোখ, মুখ এবং মুখ:গহ্বরে লক্ষণ পাওয়া যায়।

মুরগী দুর্বল হয়ে পড়ে এবং আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে মারা যায়।

লেয়ার টার্কির প্রোডাকশন কমে যায়।

টার্কির ওজন কমে যায়।

মুরগী খাদ্য এবং পানি খাওয়া কমিয়ে দেয়।

প্রতিরোধঃ

আক্রান্ত ফ্লক থেকে যেন পক্স না ছড়ায় তার জন্য সঠিকভাবে জৈব নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

নতুন ফ্লককে সম্পূর্ণরূপে আলাদা করতে হবে।

মশক নিধন করতে হবে।

দশনার্থী প্রবেশ সীমাবদ্ধ করতে হবে।

নিয়মিত রেজিস্ট্যার্ড ভেটেরিনারিয়ান এর পরামর্শ মোতাবেক ভ্যাকসিনেশন করতে হবে।

চিকিৎসাঃ

ভাইরাস জনিত রোগ হওয়ায় এর কোন সঠিক চিকিৎসা নেই, তবে পরবর্তী ব্যাকটেরয়িার সংক্রমণ রোধে এন্টিবায়োটিক খাওয়ানো যেতে পারে।

খাদ্যের সাথে কালোজিরা খাওয়ানো যেতে পারে।

ব্যাচের মধ্যে পক্স দেখা গেলে আক্রান্ত মুরগী সরিয়ে সুস্থগুলোকে ভ্যাকসিনেশন করাতে হবে।

ফাউল পক্স ভ্যাকসিন (F P V)ঃ

এই ভ্যাকসিন টার্কির ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়। এটি ২০০ মাত্রায় কঠিন অবস্থায় বায়ুশুন্য বোতলে সংরক্ষিত থাকে। এটার রং গোলাপি, ১০ মি: লি: বিশুদ্ধ পানিতে পুরাটা মিশিয়ে এই ভ্যাকসিন তৈরি করতে হয়। তৈরির পরে কবুতর ও মুরগী যাদের বয়স ২৮-৩২ দিন সেগুলো কে পাখনার নিচে, যেখানে কোন পালক নেই, সেখানে ৪-৫ টি খোটা দিয়ে এই ভ্যাকসিন লাগিয়ে দিতে হবে, খোচা দেওয়া জায়গা যদি ৪-৫ দিনের মধ্যে ফুলে উঠে তাহলে বুঝতে হবে ভ্যাকসিন টি কাজ করছে,আর যদি ফুলে না ওঠে বুঝতে হবে কাজ করেনি। পুনরায় আবার আগের নিয়মে ভ্যাকসিন দিতে হবে। এই ভ্যাকসিন প্রতি বছর ১ বার দিতে হবে।

ফাউল কলেরাঃ

ফাউল কলেরা মুরগির একটি ছোয়াচে রোগ । এটি এ্কটি ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ ।এই রোগে মৃত্যুর হার প্রায় ৫০-৭৫% পযন্ত হতে পারে। এতে খামার বেশ আথিক ক্ষতি সম্মুখীন হয়।


ফাউল কলেরা কেন হয়?

ফাউল কলেরা Pasteurella matocida নামক ব্যাক্টেরিয়া দ্বারা হয়ে থাকে ।

ফাউল কলেরা সম্পকে কিছু তথ্য

১। ২-৪ মাস বয়সের মুরগিতে এই রোগ দেখা যায়।

২। অতিরিক্ত গরম পড়লে মুরগি এই রোগে বেশি আক্রান্ত হয়।

৩। এছাড়া পরিবেশে বেশি পরিমান আদ্রতা থাকলে ও এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ।

ফাউল কলেরা রোগের লক্ষণঃ

১। জ্বর থাকবে।

২। খাদ্য গ্রহনে অনিহা থাকবে।

৩। শ্বাস নিতে কষ্ট হবে।

৪। ডিম উৎপাদন কমে যাবে।

৫। মাথার ঝুটি ও গলার ফুল ফুলে যাবে।

৬। মুরগী দুবল হয়ে যাবে।

৭। সভুজাভ,বা হলুদাভ ডায়রিয়া হতে পারে,

৮। মুখ দিয়ে লালা পড়বে

৯। মাথা নিচের দিকে দিয়ে ঝিমাবে।

চিকিৎসাঃ

১। যেহেতু ব্যাক্টেরিয়াজনিত রোগ তাই যে কোন একটি ভালো এন্টিবায়োটিক দিতে হবে, সে হিসাবে , ciprofloxacin, gentamycin, doxacycline ৩-৫ দিন দেয়া যেতে পারে।

২। এছাড়া যেহেতু পায়খানার সমস্যা আছে তাই একটি সালফার গ্রুপের ঔষধ দিতে হবে।এ ক্ষেত্রে Ati vet suspension/ Sulphatrim powder/S-trim vet ৩-৫ দিন এন্টিবায়োটিক এর সাথে দিতে হবে,

৩। গরম বেশি পড়লে ভিটামিন সি / লেবুর রস দেয়া যেতে পারে।

ফাউল কলেরা কিভাবে প্রতিরোধ করবেন?

১। ফাউল কলেরা ভ্যাক্সিন দিতে হবে।

২। খামারে জৈব নিরাপত্তা ভালোভাবে নিশ্চিত করতে হবে।

৩। খামারে ইদুরের উপদ্রুপ সম্পুনরুপে বন্ধ করতে হবে।

৪। সব সময় একজন ভাল রেজিস্টাড ভেটরিনারিয়ানের পরামশ নিতে হবে।

সালমোনেলোসিসঃ

সালমোনেলোসিস পোল্ট্রির ব্যাকটেরিয়াজনিত একটি প্রাণঘাতী রোগ।এটি পুলোরাম এবং ফাউল টাইফয়েড নামে পরিচিত।পুলোরাম রোগ বাচ্চা মুরগিতে এবং ফাউল টাইফয়েড পরিণত বয়সে দেখা দেয়।সালমোনেলোসিস পৃথিবীব্যাপী একটি সমস্যা এবং এটি পোল্ট্রিতে ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষতি সাধন করে।


টার্কি মুরগির ডিম উৎপাদন ব্যাবস্থাপনাঃ

ডিম উৎপাদনঃ

সাধারণত ৩০ সপ্তাহ বয়স থেকে টার্কি ডিম দেয়া শুরু করে । প্রয়োজনীয় আলো বাতাস, পরিষ্কার পানি এবং খাবার সরবরাহ করা হলে বসরে ৮০ – ১০০ ডিম দিয়ে থাকে । ৬০ – ৭০ শতাংশ টার্কি মুরগী বিকেল বেলায় ডিম দেয় ।

টার্কির ডিমঃ

লেয়ার টার্কির খামার স্থাপনের প্রধান উদ্দেশ্যই হলো লাভজনকভাবে ডিম উৎপাদন করা। এ জন্য দরকার একটি টার্কির উৎপাদন সক্ষমতার পরিপূর্ণ বিকাশ বা প্রদর্শনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা। নানাবিধ কারণে কোন একটি টার্কির ফ্লক থেকে যে পরিমান ডিম পাওয়ার কথা অনেক সময় তা পাওয়া যায় না। আপনার খামারে যদি ১০০ ডিম পাড়া টার্কি থাকে তাহলে ঐ টার্কি থেকে সর্বোচ্চ উৎপাদনকালীন সময়ে বা ২২ সপ্তাহ বা ২৫ সপ্তাহ বা ৫০ সপ্তাহ বয়সে যে পরিমান ডিম পাওয়ার কথা তা যদি না পাওয়া যায় তাহলে ধরে নিতে হবে কোথাও কোন সমস্যা রয়েছে।

একজন খামারিকে সফল হতে হলে এ বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারনা থাকতে হবে এবং সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে। যেসব কারণে কোন খামারে ডিম উৎপাদন কমে যায় বা বন্ধ হয়ে যেতে পারে তাহলো-টার্কির বয়স, জাত, পুষ্টি, পীড়ন, দিনের দৈর্ঘ্য ইত্যাদি। একটি টার্কি দিনে একটিই ডিম পাড়বে। ডিম উৎপাদন বৃদ্ধি বা বাড়ানোর কৌশল মানে একটি টার্কি থেকে দিনে একটির বেশি ডিম পাওয়া নয়। ডিম পাড়া শুরু করলে সপ্তাহে এক বা দু’দিন ডিম পাড়া বন্ধ থাকে। এ কারণে উৎপাদন কম হয়। যে বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিতে হবে তাহলো টার্কি ও ডিমের অনুপাত কমিয়ে রাখা। অর্থাৎ যখন টার্কি থেকে কাক্সিক্ষত পরিমান ডিম পাওয়া যাবে না তখন যে বিষয়গুলো সম্পর্কে প্রথমেই অনুসন্ধান করতে হবে।

আলোঃ

আমরা জানি টার্কির যৌন পরিপক্কতায় আসা এবং ডিম উৎপাদনের উপর আলোর প্রভাব খুব গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত যখন দিনের দৈর্ঘ্য বেশি থাকে তখন টার্কি ডিম বেশি পাড়ে। ডিমপাড়া টার্কির জন্য দৈনিক ১৪ ঘণ্টার বেশি দিনের আলো দরকার। শীতকালে টার্কির ডিম উৎপাদন কমে যাওয়ার একটি অন্যতম কারণ হলো দিনের দৈর্ঘ্য কম হওয়া। তবে আধুনিক বাণিজ্যিক টার্কি খামারে কৃত্রিম আলো প্রদানের মাধ্যমে টার্কির ডিমপাড়ার জন্য আলোক ঘণ্টা তৈরি করা হয়। বাণিজ্যিক লেয়ার টার্কির খামারে একজন অভিজ্ঞ ও সচেতন খামারি টার্কির ঘরে কৃত্রিম আলোক ঘণ্টা তৈরি করে ডিম উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে পারেন।

আমাদের নধপশুধৎফ পোল্ট্রির ক্ষেত্রে বিষয়টি খুব সহজে চোখে পড়ে কারণ কোন আলোক কর্মসূচি থাকে না বিধায় শীতের শুরু থেকে বিশেষ করে অক্টোবর-নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত ডিম পাড়া কমে যায় এবং এরপর থেকে আবার ডিম পাড়া শুরু করে। বাণিজ্যিক খামারে টার্কির ডিম উৎপাদনের হার কমে গেলে বা নির্দিষ্ট সময়ের আগে বা পরে ডিম পাড়া শুরু করলে টার্কি পালনকারি/খামারিকে এই সাধারণ বিষয়টি সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। কারণ যখন দিনের দৈর্ঘ্য বেশি থাকে তখন উৎপাদনে আসে। পুলেট যখন ডিমপাড়া শুরু করে তখন আস্তে আস্তে আলোক ঘণ্টা বাড়াতে হবে। সারাবছর ধরে ডিম উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে আলোক প্রদান কর্মসূচি প্রণয়ন করতে হবে।

পীড়নঃ

পীড়নের কারণে টার্কির ডিমপাড়া কমে যায় এমন কি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। যে সব কারণে টার্কিতে পীড়ন বা ধকল সৃষ্টি হয় তা হলো-

১. যদি ডিমপাড়া টার্কির শেডের তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা খুব বেশি বা কম হয়।

২. যদি শেডে টার্কির জন্য পর্যাপ্ত জায়গা এবং প্রয়োজনীয় খাদ্য পাত্র, পানির পাত্র সরবরাহ নিশ্চত করা না হয়।

৩. পরিবেশের উচ্চ তাপমাত্রা বা পরিবেশ প্রতিকুল হলে।

৪. ভ্যাক্সিনেশন, ঠোটকাটা বা ট্রিমিং, পরিবহন জনিত সময়ে পীড়ন সৃষ্টি হয়।

৫. খাদ্যের গুণগত মানের সমস্যা হলে, খাদ্যে টক্সিন এর উপস্থিতি।

৬. টার্কি হ্যান্ডলিং এর সময়।

৭. ভেনটিলেশন ব্যবস্থা ভালো না হলে।

৮. ব্যবহৃত লিটারের গুণগতমান ভালো না হলে।

৯. ক্লিনিক্যাল, সাবক্লিনিক্যাল বিভিন্ন রোগের কারণে টার্কিতে পীড়ন বা ধকল সৃষ্টি হয়।

১০. সরবরাহকৃত পানির গুণগতমান ভালো না হলে বা পানি দূষিত হলে পানি গ্রহণ কমে যায় এবং পানিবাহিত রোগ সংক্রমণ ঘটে এটাও এক ধরনের পীড়ন।

১১. টার্কির ঘরে আলোর তীব্রতাও পীড়নের কারণ। টার্কির ঘরে এ ধরনের ঘটনার উদ্ভব হলে তাৎক্ষণিক কার্যকর ব্যবস্থা করে টার্কির উৎপাদন স্বাভাবিক রাখা যায়।

বাজারজাতকরণঃ

টার্কি ১২ – ২০ সপ্তাহের মধ্যেই বাজারজাতকরণ যাই। বর্তমানে টার্কি খুবই জনপ্রিয় হএ উঠেছে যার কারণে এখন বাজারজাতকরণ খুবই সহজ একটা বিষয় ।

টার্কি মুরগি চাষে সফল খামারির মন্তব্যঃ

টার্কি মুরগি আসলেই একটি লাভজনক ব্যবসা এই বিষয় নিএ অনেক প্রতিবেদন আছে এবং অনেক খামারি তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন।

No comments:

Post a Comment