কবিতা- শুভ্রনীলা-১
(Love at first sight)
কলমে- সুমন সাহা
শুভ্রঃ
মেডিকেলের 3rd year 2nd proof এর পর
তনুমন বেরসা হয়ে উঠেছে।
গিটারের ডিজটিউনিং এর মতো জীবনের ছন্দ পতন।
বিরক্তি, বিরক্তি আর বিরক্তি!
কাল সারা রাত এই আনন্দে ঘুমায়নি যে
পরীক্ষা নামক প্যারা হতে আপাতত মুক্ত।
দুপুর ১২ টা।
বুয়ার ডাকে ঘুম ভাঙ্গল।
দরজা খুলতেই চোখ পড়ল, অন্যান্য ফ্ল্যাটের আতঙ্কিত লোকজন ছুটা ছুটি করে সিঁড়ি দিয়ে নামছে।
কিছুটা ভয় আমিও পেলাম।
নিচে তলায় এসে ঝাকুনিটা টের পেলাম।
ভূমিকম্প, ভূমিকম্প বলে চারদিকে চিৎকার; আতঙ্কিত মানুষের ছুটাছুটি,
আমাকে ক্ষণকালের জন্য হৃত-বিহ্বল করে দিল।
শোরগোল আরো বেড়ে গেল।
এগিয়ে গেলাম,
দেখলাম দৌড়ে নামতে গিয়ে একটি ১৭ বা ১৮ বছরের মেয়ে সিঁড়ি থেকে পড়ে গেছে।
কিন্তু ভয়ে কেউ এগিয়ে যাচ্ছে না।
অত শত না ভেবে এগিয়ে গেলাম।
ব্যাথা আর ভয়ে মেয়েটা আতঙ্কিত,
পাজা কোলে করে দিলাম ছুট।
মেয়েটি আমায় এমন ভাবে জড়িয়ে ধরল
যেন শত সহস্র বছরের চেনা!
ওর গরম নিঃশ্বাস অামাকে আরো উত্তপ্ত করে তুলল।
সদ্য ভেজা চুল থেকে ভেসে আসছিল স্বর্গীয় সুঘ্রাণ!
আমি নিমেষে তার বুকের মাংসীল উপত্যকায় হাড়িয়ে গেলাম।
এ যেন এক মাদকতা!
চারপাশে ভয়ার্ত মানুষ, আতঙ্কিত ভূমিকম্পের প্রকোপে,
কিন্তু আমার অনুভবে শীতলতা।
আরেকটা নিরব ভূমিকম্প বয়ে গেল আমার হৃদপিন্ড জুড়ে।
নিচে নামতেই সর্পকুন্ডলির মতো সবাই ভীর করল।
এবার ওকে নিচে নামানোর সকল সুনিপুণ চেষ্টা ব্যর্থ হলো।
যতবার নামাতে চেষ্টা করি, ততই আঁকড়ে ধরে;
মুখ লুকায় বুকের বাঁ পাশে।
স্টেথোস্কোপের মতো হৃৎপিন্ডের দেয়ালে লেপ্টে যাচ্ছিল।
পায়ে মোচর লাগায় দাঁড়াতে ও পারছিলো না,
এভাবেই নিয়ে গেলাম পার্শ্ববতী হাসপাতালে।
ততক্ষনে ভূমিকম্প থামলেও
হৃদপিন্ডে মুহূ মুহূ কম্পন অনুভূত হলো।
বাড়ি ফিড়ে বিষণ্ণতা আরো বেড়েগেল।
ঐ অচেনা মেয়েটির মুখচ্ছবি জলপর্দার মতো মনের জানালা বেয়ে পড়তে লাগল।
হয়তো একেই বলে Love at first sight.
No comments:
Post a Comment