eBongBD.com

"All about things for easy life"
This is a website about solution of our daily problems. You can get here all Problem's solution.

Breaking

পড়ার টেবিলে বসার পূর্বে ১০ মিনিট হাঁটলে বা হালকা ব্যায়াম করলে মস্তিষ্কের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এতে পড়া মনে রাখতে বেশ সুবিধা হয়।

Saturday, January 18, 2020

হোমিওপ্যাথিতে প্রচলিত টিউমার/ক্যানসারের ঔষধ

হোমিওপ্যাথিতে প্রচলিত টিউমার/ক্যানসারের ঔষধগুলোর বেশীর ভাগই বার্নেট আবিষ্কার করেন এবং ক্যানসারের এসব ভয়ঙ্কর ভয়ঙ্কর ঔষধ তাঁর নিজের শরীরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার কারণে অল্প বয়সেই তিনি হার্ট এটাকে মৃত্যুবরণ করেন। বার্নেট তাঁর দীর্ঘ গবেষণায় প্রমাণ করেছিলেন যে, টিউমার এবং ক্যান্সারের একটি বড় কারণ হলো টিকা বা ভ্যাকসিনের (vaccine) পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। তিনিই প্রথম আবিষ্কার করেন যে, থুজা (Thuja occidentalis) নামক হোমিও ঔষধটি টিকার প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্ট অধিকাংশ রোগ দূর করতে সক্ষম। তিনি সব সময় বলতেন যে, “ছোট হাতে টিউমার এবং ক্যান্সার নিরাময় করা সম্ভব নয় ; এজন্য বড় হাত লাগবে”। অর্থাৎ সাধারণ হোমিও ডাক্তারদের দ্বারা টিউমার এবং ক্যান্সারের চিকিৎসা সফল হয় না বরং হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে প্রচণ্ড দক্ষতা আছে এমন ডাক্তার প্রয়োজন।
টিউমার এবং ক্যান্সারের চিকিৎসায় তিনি একটি বিশেষ পদ্ধতি প্রবর্তন করেন যাকে মই বা লেডার পদ্ধতি (Ladder system) নামে অভিহিত করতেন। অর্থাৎ অনেক উপরে উঠতে যেমন আমাদের মইয়ের অনেকগুলো ধাপ ডিঙাতে হয়, তেমনি টিউমার এবং ক্যান্সারের মতো মারাত্মক জটিল রোগের চিকিৎসাতেও লক্ষণ অনুযায়ী একে একে অনেকগুলো ঔষধের সাহায্য নিতে হয়।
হোমিও চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা আজ থেকে দুইশত বছর পূর্বেই ক্যানসারের প্রকৃত চিকিৎসা আবিষ্কার করতে সক্ষম হয় ; কিন্তু ঔষধ কোম্পানীর এই দালালরা তখন থেকেই হোমিওপ্যাথিকে “অবৈজ্ঞানিক চিকিৎসা”, “ভূয়া চিকিৎসা”, “হাতুড়ে চিকিৎসা” ইত্যাদি নানাভাবে গালাগালি করে মানুষকে বিভ্রান্ত করে আসছে। অপপ্রচারের পাশাপাশি গত দুইশ বছরে তারা তাদের সরকারী, সাংগঠনিক এবং অথনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে হোমিওপ্যাথিকে সারা দুনিয়া থেকে কয়েকবার ধ্বংস করেছে কিন্তু জনপ্রিয়তার কারণে হোমিওপ্যাথি প্রতিবারই ধ্বংসস্তুপ থেকে আবার গা ঝারা দিয়ে উঠে দাঁড়িয়েছে। শুধু হোমিওপ্যাথি-ই নয় বরং অন্য যে-কেউও যদি ক্যানসারের চিকিৎসা আবিষ্কারের মাধ্যমে অথবা অন্য কোনভাবে এসব বাঘা বাঘা ঔষধ কোম্পানীগুলোর ব্যবসায়িক স্বার্থে ব্যাঘাত ঘটায়, তাহলেই এই শয়তানী চক্র (evil industry) তাকে বিনাশ করার জন্য সর্বশক্তি নিয়োগ করে চেষ্ঠা চালাতে থাকে।

হোমিও চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, আমাদের জীবনী শক্তি বিকৃত (deviate) হলেই শরীর ও মনে নানারকম রোগের উৎপত্তি হয়। জীবনী শক্তি তার স্বাভাবিক পথ থেকে লাইনচ্যুত (out of track) হলেই শরীর এবং মনে ধ্বংসাত্মক (destructive) ক্রিয়াকলাপের সূচনা হয়। যেমন টিউমারের সৃষ্টি হওয়া (neoplasm), পাথর তৈরী হওয়া (calculus), ব্যাকটেরিয়া-ভাইরাসের আক্রমণ (germ infection), কোন অঙ্গ সরু হওয়া (atrophy), কোন অঙ্গ মোটা হওয়া বা ফুলে যাওয়া (hypertrophy) ইত্যাদি ইত্যাদি। পরবর্তীতে ঔষধের মাধ্যমে যদি আমরা জীবনী শক্তিকে সঠিক পথে ফিরিয়ে (back to the track) আনতে পারি, তবে শরীর ও মনে আবার বিপরীতমুখী ক্রিয়ার (reverse action), মেরামতকরণ (reconstruction) ক্রিয়া আরম্ভ হয়। আমাদের শরীর তখন নিজেই টিউমারকে শোষণ (absorb) করে নেয়, পাথরকে গলিয়ে (dissolve) বের করে দেয়, জীবাণুকে তাড়িয়ে দেয়, সরু এবং ফুলা অঙ্গকে স্বাভাবিক করে দেয় ইত্যাদি ইত্যাদি। এভাবে ঔষধ প্রয়োগে জীবনীশক্তিকে উজ্জীবিত করার মাধ্যমে শরীরের নিজস্ব রোগ নিরাময় ক্ষমতাকে ব্যবহার রোগমুক্তি অর্জন করাই হলো প্রাকৃতিক (natural) এবং সঠিক পদ্ধতি। আমাদেরকে বুঝতে হবে যে, টিউমার/ ক্যান্সার একটি নির্দিষ্ট স্থানে / অঙ্গে দেখা দিলেও এটি কোন স্থানিক রোগ (Local) নয় ; বরং এটি সামগ্রিক দৈহিক (systemic) রোগ। এগুলো এক জায়গায় দেখা দিলেও এদের শিকড় থাকে অন্য জায়গায় । কাজেই অপারেশন (surgery), কেমোথেরাপি (chemotherapy), রেডিয়েশন (radiotherapy) ইত্যাদির মাধ্যমে ক্যান্সার নির্মূল করা সম্ভব নয়। কেটে-কুটে, রেডিয়েশন দিয়ে, কেমোথেরাপি দিয়ে এক জায়গা থেকে বিদায় করা গেলেও কদিন পর সেটি অন্য (আরো নাজুক) জায়গায় গিয়ে আবার দেখা দিবেই। ক্যান্সার-টিউমারের দৃষ্টানত্ম হলো অনেকটা আম গাছের মতো। আম কেটে-কুটে যতই পরিষ্কার করম্নন না কেন, তাতে কিছু দিন পরপর আম ধরতেই থাকবে। যতদিন না আপনি আম গাছকে শিকড়সহ উৎপাটন না করছেন। আর ক্যান্সারের শিকড় হলো এলোপ্যাথিক ঔষধ এবং টিকা (vaccine)। নিরপেক্ষ চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, “ক্যান্সার কোন জন্মগত বা বংশগত রোগ নয় ; বরং এটি পুরোপুরি ঔষধের (এবং টিকার) বিষক্রিয়াজনিত সৃষ্ট রোগ”। যেহেতু যে-কোন রোগের এলোপ্যাথিক চিকিৎসা করালে প্রচুর ঔষধ খেতে হয়, তাই বলা যায় ক্যান্সার হলো এলোপ্যাথিক ঔষধ-টিকার দ্বারা সৃষ্ট একটি রোগ। আর এলোপ্যাথিক ঔষধ এবং টিকার বিষক্রিয়া নষ্ট করার ক্ষমতা একমাত্র হোমিও ঔষধেরই আছে।

চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, পৃথিবীতে একবার যে জন্ম নিয়েছে, তার ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি থেকে কোন মুক্তি নেই। কিন্তু হোমিও চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা দাবী করেন যে, যেই পরিবারের লোকেরা তিন পুরুষ পর্যন্ত হোমিও চিকিৎসা ব্যতীত অন্যান্য চিকিৎসা বর্জন করে চলবে, সেই পরিবারের লোকেরা ক্যান্সার থেকে মুক্ত থাকবে। হোমিও চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, লো ব্লাড প্রেসারের (hypotension) রোগীরা সাধারণত যক্ষ্মায় (tuberculosis) আক্রান্ত হয় এবং হাই ব্লাড প্রেসারের (hypertension) রোগীরা সাধারণত ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে থাকে। প্রচলিত ক্যান্সার সনাক্তকরণ (diagnosis) প্রদ্ধতিতেও আছে অনেক ভয়ঙ্কর বিপদ । একটি গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে, শতকরা ৪০ ভাগ ক্ষেত্রে থাইরয়েড (thyroid), প্যানক্রিয়াস (pancreas) এবং প্রোস্টেট (prostate) ক্যান্সার ধরা পড়ে রোগীর মৃত্যুর পরে পোষ্ট-মর্টেম বা ময়নাতদন্তের (autopsy) সময়। অর্থাৎ দেখা যায় রোগী এসব অঙ্গের ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিল অথচ ক্যান্সারের কোন লক্ষণ প্রকাশ পায় নাই বিধায় কোন রকম চিকিৎসা ছাড়াই রোগীরা দীর্ঘদিন সুস্থ জীবনযাপন করেছেন। এসব ক্যান্সারে তাদের মৃত্যু হয় নাই। বয়স ৭৫ হলে প্রায় ৫০% পুরুষরাই প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে থাকে। কিন্তু এদের মাত্র ১% এই রোগে মৃত্যুবরণ করে। আর বাকীরা বিনা চিকিৎসায় যুগের পর যুগ সুস' থাকে কিভাবে ? হ্যাঁ, জন্মগতভাবে প্রাপ্ত আমাদের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ শক্তিই (immune system) ক্যান্সারসহ সমস্ত রোগকে সামাল দিয়ে রাখার ক্ষমতা রাখে। ক্যান্সার নির্ণয়ের একটি বহুল ব্যবহৃত পরীক্ষা পদ্ধতির নাম হলো বায়োপসী (biopsy), যাতে টিউমারের ভেতরে সুই ঢুকিয়ে কিছু মাংস ছিড়ে এনে মাইক্রোষ্কোপের নীচে রেখে পরীক্ষা করা হয়, তাতে ক্যান্সার কোষ আছে কিনা। কিন্তু সমপ্রতি বিজ্ঞানীরা প্রমাণ পেয়েছেন যে, এভাবে টিউমারকে ছিদ্র করার কারণে সেই ছিদ্র দিয়ে ক্যান্সার কোষ বেরিয়ে দ্রুত সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে (metastasis)। তখন ক্যানসার রোগীর অবস্থা শোচনীয় হয়ে যায় এবং তাদেরকে বাচাঁনো অসম্ভব হয়ে পড়ে। কেননা টিউমারগুলো আসলে ক্যান্সার নামক এই ভয়ঙ্কর বিষাক্ত পদার্থকে চারদিক থেকে গ্রেফতার করে, বন্দি করে রাখে। ফলে ইহারা সহজে সারা শরীরে ছড়াতে পারে না। কিন্তু পরীক্ষা-নিরীক্ষার নামে ছিদ্র করে তাদেরকে ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ করে দেওয়া একটি জঘন্য মূর্খতাসুলভ কাজ। আপনি হয়ত ভাবতে পারেন, চিকিৎসা বিজ্ঞানে আবার অজ্ঞতা-মূর্খতা চলে কিভাবে ? হ্যাঁ, নিরপেক্ষ গবেষকদের মতে, প্রচলিত চিকিৎসা বিজ্ঞান হলো বিজ্ঞানের নামে প্রচলিত নানান রকমের অজ্ঞতা-মূর্খতা-নির্বুদ্ধিতার একটি সবচেয়ে বড় আখড়া। কথায় বলে, বাস্তব সত্য এতই অদভূত যে তা রূপকথাকেও হার মানায়।

স্তন ক্যান্সার নির্ণয়ের জন্য মেমোগ্রাফী (Mammography) নামে একটি টেস্ট করা হয়, যাতে স্তনকে একটি যন্ত্রের মাধ্যমে চেপে ধরে বিভিন্ন এংগেলে (angle) কয়েকটি এক্স-রে করা হয়। এই টেস্ট করতে যেহেতু রেডিয়েশন (X-ray) ব্যবহৃত হয়, তাই এতে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি আছে ষোলআনা। পত্র-পত্রিকা-রেডিও-টিভিতে প্রায়ই বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় যে, তাড়াতাড়ি স্তন ক্যান্সার সনাক্ত (early detection) করার জন্য প্রতিটি সচেতন নারীর উচিত বছরে একবার করে মেমোগ্রাফী টেস্ট করা। অথচ আপনি যদি দুই/চার বার মেমোগ্রাফী করেন, তবে মেমোগ্রাফী টেস্টের কারণেই বরং আপনি আরো আগে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হবেন। কেননা রেডিয়েশানই (radiation) হলো ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার একটি বহুল প্রমাণিত বড় কারণ। বলা হয়ে থাকে, যখন থেকে চিকিৎসা ক্ষেত্রে এক্স-রে (X-ray) চালু হয়েছে, তখন থেকেই ক্যান্সারের হার বৃদ্ধি পেয়েছে দ্রুতগতিতে। এই কারণে ১৯৭৬ সালে আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটি এবং ন্যাশনাল ক্যানসার ইনিষ্টিটিউট তাদের এক ঘোষণায় অপ্রয়োজনে মেমোগ্রাফী টেস্ট করাতে সবাইকে নিষেধ করেছেন। তাছাড়া এই মেমোগ্রাফী টেস্ট অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভুয়া রিপোর্ট দিয়ে থাকে। ক্যানসার না থাকলে বলবে আছে আবার ক্যানসার থাকলে বলবে নাই ; অন্যদিকে নরমাল টিউমারকে বলবে ক্যানসার এবং ক্যানসারকে বলবে নরমাল টিউমার। ১৯৯৩ সালের ২৬ মে আমেরিকান মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়েছে যে, মেমোগ্রাফী টেস্টে ২০% থেকে ৬৩% ক্ষেত্রে ভুল রিপোর্ট আসতে পারে। কাজেই নিয়মিত মেমোগ্রাফী টেস্ট করতে বিজ্ঞাপন দিয়ে নারীদের উৎসাহিত করা নেহায়েত হাস্যকর ধান্ধাবাজি ছাড়া আর কিছুই না। অধিকাংশ ডাক্তাররা মহিলাদেরকে তাদের স্তনে টিউমার/ ক্যানসার হলো কিনা সে বিষয়ে সচেতন করার জন্য কিছুদিন পরপর নিজেদের স্তন নিজেরাই টিপে টিপে (তাতে কোন চাকা আছে কিনা) পরীক্ষা করার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
আসলে এভাবে রোগের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টির নামে ডাক্তাররা বরং মানুষের মধ্যে ভীতির সৃষ্টি করেন এবং এতে করে স্তন টিউমার/ ক্যানসারের আক্রমণের হার আরো বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। বাস্তবে দেখা গেছে, টিভিতে ব্লাড প্রেসারের (hypertension) অনুষ্টান দেখে ভয়ের চোটে আরো বেশী বেশী মানুষ ব্লাড প্রেসারে আক্রান্ত হচ্ছে। হোমিও চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের ওপর গবেষণা করে দেখেছেন যে, অধিকাংশ ক্যানসার রোগীর মনেই ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার অনেক বছর পূর্ব থেকেই ক্যানসারের প্রতি একটি ভয় কাজ করত। এবং এই অস্বাভাবিক ক্যানসার ভীতি তাদেরকে শেষ পর্যনত্ম ক্যানসারের শিকারে পরিণত করেছে। কাজেই আপনার সত্মনে যখন টিউমার / ক্যানসার হবে, তখন এটি এমনিতেই চোখে পড়বে। এজন্য ভয়ে ভয়ে রোজ রোজ টিপে টিপে দেখার কোন প্রয়োজন নাই। একইভাবে চিকিৎসা বিষয়ক যাবতীয় বিজ্ঞাপন থেকে সযত্নে একশ মাইল দূরে থাকা সকলেরই উচিত বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। আপনার শরীরের কোন স্থানে যদি ক্যানসার ধরা পড়ে, তবে সবক্ষেত্রে এটি কোন মারাত্মক ঘটনা নয় কিংবা এতে অকালে আপনার প্রাণনাশেরও আশংকা নাই। কিন্তু ডাক্তাররা এবং ঔষধ কোম্পানীসমূহ তাদের স্বার্থে তারা মানুষকে ভীতি প্রদর্শন করতে থাকে। কেবল খাদ্যভ্যাসের পরিবর্তন (diet), জীবনযাপন পদ্ধতির (Life style) সংশোধন এবং মনমানসিকতার পরিবর্তনের (emotional state) মাধ্যমে বিনা চিকিৎসায় অগণিত মানুষ ক্যানসার থেকে মুক্তি পেয়েছেন, এমন ঘটনা ইন্টারনেটে খোঁজলে অনেক দেখতে পাবেন। কলকারখানায় তৈরী খাবার (industrial food), চর্বি জাতীয় খাবার বর্জন করুন (animal fat), স্ত্রী-পুত্র-কন্যা-আত্মীয়-স্বজন-পাড়া-প্রতিবেশী পরিবেষ্টিত সহজ-সরল-সুন্দর জীবন যাপন করুন, সর্বদা আল্লাহকে স্মরণ করুন, নিয়মিত নামাজ-রোজা-দান-খয়রাত ইত্যাদি ইবাদত-বন্দেগী পালন করে চলুন, শিশুদের ভালোবাসুন, বড়দের সম্মান করুন, দরিদ্রদের কল্যাণে কাজ করুন, ফুল-পাখি-বৃক্ষ-তরুলতা-আকাশ-বাতাস-সাগর-নদী ইত্যাদির দিকে তাকিয়ে থেকে নিজের মনকে সর্বদা পবিত্র রাখুন। ক্যানসার আপনার ধারেকাছে আসতে পারবে না। আর যদি এসেও থাকে, মানে মানে কেটে পড়বে। আপনার মনকে যদি প্রথমে ক্যানসারমুক্ত করতে না পারেন, তবে দুয়েক মাস বা দুয়েক বছর ঔষধ খেয়ে কখনও শরীরের ক্যানসার দূর করতে পারবেন না। এটা একেবারেই অবাস্তব কল্পনা এবং প্রাকৃতিক নিয়ম বিরুদ্ধে। প্রকৃতি মুহূর্তের মধ্যে কিছু ধ্বংসও করে না আবার চোখের পলকে কিছু সৃষ্টিও করে না। প্রকৃতি তার সকল কাজই করে আস্তে-ধীরে, রয়ে-সয়ে দীর্ঘ সময় নিয়ে। ডাঃ লোরেইন ডে (Dr. Lorraine Day, M.D.)-এর মতে, “প্রচলিত অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতিসমূহ মানুষের ক্ষতিগ্রস্ত ইমিউন সিস্টেমকে (immune system) পুণরায় শক্তিশালী করার মাধ্যমে রোগ নির্মূল করে থাকে। পক্ষান্তরে কেমোথেরাপি এবং রেডিওথেরাপি মানুষের ইমিউন সিস্টেমকে একেবারে ধ্বংস করে দেয়। ক্যানসার হলো একটি ইমিউন সিস্টেমের রোগ। কোন মানুষের ইমিউন সিস্টেম

কোন মানুষের ইমিউন সিস্টেম অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধ শক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হলেই কেবল তাকে ক্যানসার আক্রমণ করে থাকে। কাজেই যেই চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে ইমিউন সিস্টেম আরো ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তা দিয়ে কিভাবে ক্যানসার নির্মূল করা সম্ভব ?”। বার্নেট তাঁর ক্লিনিক্যাল গবেষণায় লক্ষ্য করেন যে, একটি বা দুটি হোমিও ঔষধ ব্যবহারে প্রায়ই টিউমার এবং ক্যান্সার সারানো যায় না। কারণ টিউমার/ ক্যান্সারের পেছনে সাধারণত অনেকগুলো কারণ (Link) থাকে। আর একেকটি কারণ দূর করতে একেক ধরনের ঔষধের প্রয়োজন হয়। তিনি পিত্তপাথর থেকে কোলেস্টেরিনাম (Cholesterinum) নামক একটি ঔষধ আবিষ্কার করেন যা দিয়ে অনেক লিভার সিরোসিস এবং লিভার ক্যান্সার তিনি নির্মুল করেছেন। হোমিওপ্যাথিতে ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যর্থতার একটি মুল কারণ হলো রোগীর জীবনীশক্তিহীনতা বা মারাত্মক শারীরিক দুর্বলতা (low vitality)। অধিকাংশ রোগী কবিরাজি এবং এলোপ্যাথিক চিকিৎসা করে শরীরের বারোটা বাজিয়ে যখন প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়, তখন আসে হোমিও চিকিৎসকের কাছে।
আমার আশ্চর্য লাগে যখন দেখি লোকেরা স্তন টিউমার এবং স্তন ক্যান্সারের মতো মামুলি রোগে অপারেশন, কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি ইত্যাদি করে ধ্যানাধ্যান মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। অথচ মহাপরাক্রমশালী হোমিও ঔষধের কাছে স্তন টিউমার এবং স্তন ক্যান্সার একেবারে মামুলি রোগ। স্তন টিউমার সম্পর্কে বার্নেট একটি মজার গল্প লিখে গেছেন। এক মহিলার স্তনে ক্যান্সার হলে বার্নেট প্রায় দেড় বৎসর হোমিও ঔষধ খাইয়ে বিনা অপারেশনে সেটি সারিয়ে দেন। কিছুদিন পর সেই মহিলা তার এক বান্ধবীকে বার্নেটের কাছে নিয়ে আসেন, যার ডান স্তনে একটি টিউমার হয়েছে। ভদ্র মহিলা বার্নেটকে জিজ্ঞেস করলেন, “এটি নিরাময় করতে আপনার কত দিন লাগবে ?”। বার্নেট বললেন, “দুই বৎসর”। ভদ্র মহিলা বললেন, “তাহলে আমি অপারেশন করাকেই ভালো মনে করি। কেননা তাতে মাত্র পনের দিন লাগে”। তারপর সে অপারেশন করাল এবং অপারেশনের ছয় মাস পরে তার বাম স্তনে আবার টিউমার দেখা দিল। বাম স্তনে টিউমার আবার অপারেশন করে ফেলে দেওয়ার ছয়মাস পরে তার জরায়ুতে ক্যান্সার দেখা দেয়। জরায়ুতে অপারেশনের কিছুদিন পর সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল। এভাবে দুই বছর ঔষধ খাওয়া যার কাছে বিরক্তিকর মনে হয়েছিল, তিন তিনটি অপারেশনের ধাক্কায় দেড় বছরের মধ্যে সে দুনিয়া ছেড়ে বিদায় নিল। হায় ! নির্বোধ মানুষেরা সব বিষয়ে কেবল শর্টকার্ট রাস্তা খোঁজে ; কিন্তু তারা বুঝতে চায় না যে, শর্টকার্ট রাস্তা প্রায় সবক্ষেত্রেই মানুষের জন্য ধ্বংস ডেকে আনে। হোমিও চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণায় লক্ষ্য করেছেন যে, হোমিও চিকিৎসার মাধ্যমে স্তন টিউমার/ক্যানসার নিরাময়ের পর কিছু কিছু ক্ষেত্রে গুণে গুণে ঠিক বিশ বছর পর সেগুলো আবার দেখা দেয় এবং তখন সেসব রোগীদের কাউকে কাউকে হোমিও চিকিৎসার মাধ্যমে তিন বছরের বেশী বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হয় না। কাজেই যারা স্তন টিউমার/ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের কারো কারো আয়ু আর মাত্র তেইশ (CCCIII) বছর বাকী আছে বলে ধরে নিতে পারেন। হোমিওপ্যাথিকে বলা হয় পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা বিজ্ঞান (holistic healing science) অথবা মনো-দৈহিক গঠনগত (Constitutional medicine) চিকিৎসা বিজ্ঞান। অর্থাৎ এতে কেবল রোগকে টার্গেট করে চিকিৎসা করা হয় না বরং সাথে সাথে রোগীকেও টার্গেট করে চিকিৎসা করা হয়। রোগীর শারীরিক এবং মানসিক গঠনে কি কি ত্রুটি আছে (congenital defect), সেগুলোকে একজন হোমিও চিকিৎসক খুঁজে বের করে তাকে সংশোধনের চেষ্টা করেন।

রোগটা কি জানার পাশাপাশি তিনি রোগীর মন-মানসিকতা কেমন, রোগীর আবেগ-অনুভূতি কেমন, রোগীর পছন্দ-অপছন্দ কেমন, রোগী কি কি জিনিসকে ভয় পায়, কি ধরণের স্বপ্ন দেখে, ঘামায় কেমন, ঘুম কেমন, পায়খানা-প্রস্রাব কেমন, কি পেশায় নিয়োজিত আছে, কি কি রোগ সাধারণত তার বেশী বেশী হয়, অতীতে কি কি রোগ হয়েছিল, বংশে কি কি রোগ বেশী দেখা যায়, রোগীর মনের ওপর দিয়ে কি ঝড় বয়ে গেছে ইত্যাদি ইত্যাদি জেনে রোগীর ব্যক্তিত্ব (individuality) বুঝার চেষ্টা করেন এবং সেই অনুযায়ী ঔষধ নির্বাচন করেন। এই কারণে হোমিওপ্যাথিক ঔষধে এমন রোগও সেরে যায়, যা অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতিতে কল্পনাও করা যায় না। একজন হোমিও চিকিৎসক রোগীর শারীরিক কষ্টের চাইতে বেশী গুরুত্ব দেন রোগীর মানসিক অবস্থাকে। কেননা হোমিও চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেছেন যে, অধিকাংশ জটিল রোগের সূচনা হয় মানসিক আঘাত (mental shock) কিংবা মানসিক অস্থিরতা, উৎকন্ঠা, দুশ্চিন্তা (anxiety) থেকে। মোটকথা অধিকাংশ মারাত্মক রোগের প্রথম শুরুটা হয় মনে এবং পরে তা ধীরে ধীরে শরীরে প্রকাশ পায়। এজন্য হোমিও চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলতেন যে, মনই হলো গিয়ে আসল মানুষটা (mind is the man)। তাছাড়া পৃথিবীতে হোমিও ঔষধই একমাত্র ঔষধ যাকে মানুষের শরীর এবং মনের ওপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আবিষ্কার করা হয়েছে। পক্ষান্তরে দুনিয়ার অন্য সমসত্ম ঔষধই আবিষ্কার করা হয় ইঁদুর-খরগোশ-গিনিপিগ ইত্যাদি পশুদের শরীরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে। এই কারণে হোমিও ঔষধ মানুষের শরীর ও মনকে যতটা বুঝতে পারে, অন্য কোন ঔষধের পক্ষেই তা সম্ভব নয়।

সে যাক, টিউমার এবং ক্যান্সার চিকিৎসায় আমাদের সকলেরই উচিত প্রথমে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা অবলম্বন করা। কেননা, কেমোথেরাপি, অপারেশন, রেডিয়েশন ইত্যাদি শতকরা নিরানব্বই ভাগ ক্ষেত্রেই রোগীর মৃত্যুকে দ্রুত ডেকে আনে। হোমিওপ্যাথিতে টিউমার/ ক্যান্সার চিকিৎসার আরেকটি বিরাট সুবিধা হলো এতে শতকরা নিরানব্বই ভাগ ক্ষেত্রে ব্যয়বহুল, কষ্টদায়ক এবং ক্ষতিকারক কোন প্যাথলজিক্যাল টেস্টের দরকার হয় না (যেমন-বায়োপসি, মেমোগ্রাফী, এক্স-রে, সিটি ষ্ক্যান (CT scan), এমআরআই (MRI) ইত্যাদি)। কেননা হোমিওপ্যাথিতে ঔষধ দেওয়া হয় রোগীর শারীরিক গঠন এবং মানসিক বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে। যারা ইতিমধ্যে কেমোথেরাপি, অপারেশন, রেডিয়েশান ইত্যাদি অপচিকিৎসা নিয়ে মৃত্যুর দুয়ারে পৌঁছে গেছেন, তাদেরও কাল বিলম্ব না করে হোমিও চিকিৎসা গ্রহন করা উচিত। ইহার মাধ্যমে তারা ঐসব কুচিকিৎসার কুফল থেকে মুক্ত হয়ে আবারও রোগমুক্ত সুস্থ-সুন্দর জীবনধারায় ফিরে আসতে সক্ষম হবেন। যেহেতু আমাদের দেশে মেধাসমপন্ন হোমিও চিকিৎসকের যথেষ্ট অভাব রয়েছে, সেজন্য ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ এবং মেডিসিন বিশেষজ্ঞদের উচিত সামান্য কষ্ট স্বীকার করে হোমিওপ্যাথি আয়ত্ত করে নেওয়া এবং জনস্বার্থে হোমিও ঔষধ প্রেসক্রাইব করা। কেননা এগুলো একই সাথে রোগের জন্যও ভালো এবং রোগীর চিকিৎসা ব্যয়ও কমিয়ে দেয় একশ ভাগ। এমনকি যে-সব ক্ষেত্রে ক্যান্সার সারা শরীরে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার কারণে রোগীকে বাচাঁনো কোন মতেই সম্ভব নয়, সেক্ষেত্রে মৃত্যুর পূর্ব পর্যনত্ম রোগীর যাবতীয় অমানুষিক কষ্টসমূহ নিয়ন্ত্রণে রাখার চিকিৎসাতেও (palliative treatment) হোমিও ঔষধ অন্য যে-কোন ঔষধের চাইতে সেরা প্রমাণিত হয়ে থাকে। তাই যে-সব সেবামুলক সংস্থা মানুষকে ক্যান্সারের চিকিৎসা সেবা প্রদানে রত আছে, তারা ইচ্ছে করলে ক্যানসারের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা সেবা দেওয়ার মাধ্যমে একই পয়সায় আরো শতগুণ বেশী মানুষকে প্রকৃত চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে পারেন।

No comments:

Post a Comment