সাবু দানা ( সাগু দানা) কিসের তৈরী এবং কি কি উপকার?
সাগু বা সাবুদানার নাম শোনেনি এমন বাঙ্গালী একটিও খুঁজে পাওয়া যাবে না। দেখতে অনেকটা ছোট ছোট সাদা দানাদার আকারের মুক্ত দানার মত।
কিন্তু কোথা থেকে আসে এই সাগু বা সাবুদানা?
এটি কি কোন গাছে ধরে?
নাকি একেবারেই হাতে বা মেশিনে তৈরি করা হয়?
এসকল প্রশ্নের উত্তর আমরা খুব কমজনেই জানি। আসুন জেনে নেই কোথা থেকে আসে এই সাগু।
(আপনি যদি আমাদের চ্যানেলে নতুন হয়ে থাকেন তবে সাবস্কাইব বাটনে ক্লিক
করে বেল আইকনটি বাজিয়ে রাখুন আমাদের নিত্য-নতুন ভিডিওর আপডেট সবার আগে পাওয়ার জন্য)
করে বেল আইকনটি বাজিয়ে রাখুন আমাদের নিত্য-নতুন ভিডিওর আপডেট সবার আগে পাওয়ার জন্য)
সাগু হল এক প্রকার স্টাচ বা কার্বোহাইড্রেট যা বিভিন্ন উষ্ণমন্ডলীয় পাম গাছের কাণ্ডের ভেতরের নরম স্পঞ্জের মত অংশ হতে নিষ্কাশিত নির্যাস। যার বৈজ্ঞানিক নাম Metroxylon sagu ।
Metroxylon শব্দটি একটি গ্রিক শব্দ।যা Metro থেকে এসেছে, যার অর্থ “গাছের নরম অন্তসার” আর Xylon অর্থ “কাঠ”।
এটি পাপুয়া, নিউ গিনি ও মলাস্কার নিম্নাঞ্চলের মানুষের অন্যতম প্রধান খাবার। সেখানে এটি SakSak, Rabia ও sagu নামে পরিচিত। সাগুর বৃহত্তম যোগান আসে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, বিশেষ করে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া থেকে ।
সাগুদানাকে ইংরেজিতে “সাগু পার্ল” বলে। আমাদের দেশে এই সাগু বা সাবুদানা খুব পরিচিত একটা খাবার। বিশেষ করে বাচ্চা ও রোগী জন্য এটি একটি আর্দশ খাবার। সাগু শর্করার বেশ ভাল একটি উৎস হওয়ার দরুন এটি জনপ্রিয়তার শীর্ষে।
সাগুদানার মূল উপাদান এক প্রজাতির পাম গাছ। টাপিওকা বা কাসাভা নামের পাম গাছের শক্ত কান্ড ও মূল থেকে সংগ্রহ করা হয় এই সাগু। যেটা পৃথিবীর তৃতীয় সর্বোচ্চ কার্বোহাইড্রেট সরবরাহের উৎস।
এই পাম গাছ লম্বায় ৬ থেকে ১৬ মিটার পর্যন্ত হয়। কখনো কখনো ২৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। প্রতিটি গাছে ২০ থেকে ২৫টির মতো পাতা হয়। এই গাছে মাত্র একবারই ফুল ফোটে এবং ফল ধরার পর গাছ মারা যায়। আর এই পাম গাছের কান্ডের নির্যাস থেকে সাগু পাওয়া যায়।
দক্ষিন আমেরিকা, আফ্রিকা এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ব্যাপক ভাবে কাসাভার চাষ হয়ে থাকে।এটা অত্যন্ত কষ্ট সহিষ্ণু গাছ যা প্রচন্ড খরায়ও টিকে থাকতে পারে।
কাসাভা বেশ কয়েক প্রজাতির হয়ে থাকে যার কয়েকটি মারাত্বক বিষাক্ত। এমনকি ভাল জাতের কাসাভা ও ঠিক মত প্রস্তুত না করা হলে বিষাক্ত হয়ে যেতে পারে।
কান্ডের মধ্যকার স্পোর থেকে মূল গাছ জন্মায়। স্পোর লাগানোর পর ফসল আহরণের জন্য সাধারনতঃ ৭ থেকে ১৫ বছর পর যখন ফুল ধরার সময় হয় তখন সেটা কেটে এর কাণ্ডকে চিড়ে ফেলা হয়।
এই কাণ্ডকে দেখতে অনেকটা আমাদের মিষ্টি আলুর মত।
এরপর এর কাণ্ডের ভেতরের নরম ‘পিথ’ কে ধারালো কিছু দিয়ে কুপিয়ে আলাদা করা হয়। এরপর একে পানিতে ভিজিয়ে রাখলে এর ভেতরের স্টার্চ তরলের নিচে জমা হয়। পানি দূর করে এই সাদা রংয়ের স্টার্চকে আলাদা করে শুকানো হয়। একেই বলে সাগু।
সাগু বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় প্রথমে ময়দা আকারে পাওয়া যায়। একে ইচ্ছে করলে ময়দা আকারেও খাওয়া যায়। কিন্তু বাজারজাতের জন্য একে মেশিনের সাহায্যে দানা করে তারপর খাওয়ার জন্য তৈরি করা হয়। সাগুদানাকে ইংরেজিতে ‘সাগু পার্ল’ বলে।
এটি সহজেই হজম হয়, তাই শিশু খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি মানব শরীরে দ্রুত শক্তি যোগায়, পেশী সংকোচন এ সহায়তা করে এবং পানির ভারসাম্য রক্ষা করে।
খুবই কম পরিমানে চর্বি থাকায় হার্টের রোগীদের জন্য সাগু একটি আদর্শ খাবার।এটি উন্নত মানের কার্ব, ফাইবার ও ক্যালসিয়ামের উৎস। বহু দেশের অতি পরিচিত ও প্রিয় খাদ্য এই শাগুদানা। সাগুদানার অনেক ধরনের রেসিপি রয়েছে। এগুলো শুধু মজাই নয়, পুষ্টিগুণেও দারুণ।
No comments:
Post a Comment